খাবার স্যালাইন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এবং প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা
যে কোন রোগের পানিশূণ্যতা রোধে সবার আগে যে নামটি আসে তা হল খাবার স্যালাইন বা ওরস্যালাইন। কিন্তু ওরস্যালাইন নিয়ে আমাদের কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এছাড়া খাবার স্যালাইন বানানোর সঠিক পদ্ধতি, কিভাবে খেতে হবে এসব সম্পর্কে অনেকেই ধারণা রাখে না। চলুন জেনে নেই খাবার স্যালাইন এর আদ্যোপান্ত।
ডায়রিয়া, কলেরা অথবা যেকোনো কারণে অতিরিক্ত বমি বা পাতলা পায়খানা হলেই সর্বপ্রথম আমরা যেটা্র দ্বারস্থ হই সেটা হলো খাবার স্যালাইন। বাড়িতে ছোট শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক কারো ঘন ঘন পাতলা পায়খানা বা বমি হচ্ছে সেক্ষেত্রে নিশ্চিন্তে আপনি খাবার স্যালাইনের উপর ভরসা করতে পারেন। কিন্তু খাবার স্যালাইন পান করার সময় ছোটখাটো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মেনে চলছেন কি?
তাই আজ আমরা আলোচনা করব খাবার স্যালাইন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য যেমন-খাবার স্যালাইন খাওয়ার নিয়ম, ঘরে স্যালাইন বানানোর পদ্ধতি, খাবার স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও খাবার স্যালাইন সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা যেগুলো অনেক সময় মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
খাবার স্যালাইন বা ওরস্যালাইন কি?
খাবার স্যালাইন বা ORS (Oral Rehydration Solution) হলো এমন এক ধরনের পানীয় যা পানিশূন্যতা দূর করতে ব্যাবহৃত হয়। বিশেষ করে এটি ডায়রিয়া, অতিরিক্ত বমির কারণে সৃষ্টি হওয়া পানিশূন্যতা দূর করার জন্য অধিক পরিচিত। যখনই ডায়রিয়া শুরু হয়, অথবা অনেক বেশি বমি হয়, তখন তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রতিরোধ করার জন্য রোগীকে ওরস্যালাইন দেওয়া হয়।
এটিই ডায়রিয়া রোগের সর্বপ্রথম চিকিৎসা। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানির পাশাপাশি লবণের পরিমাণও কমে যায়। এজন্য সাধারণ খাওয়ার পানি যথেষ্ট নয়। পানির পাশাপাশি লবণের স্বল্পতা দূর করতে এজন্য বিশেষ ধরনের পানীয় রোগীকে দেওয়া হয়, এবং এটিই হলো খাবার স্যালাইন।
খাবার স্যালাইনের উপাদান
খাবার স্যালাইন এর মূল উপাদান হলো-
- পানি,
- গ্লুকোজ,
- সোডিয়াম এবং,
- পটাশিয়াম লবণ।
যেহেতু ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে অনেক বেশি মাত্রায় পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, একারনে নির্দিষ্ট অনুপাতে পানি এবং লবণ রোগীর শরীরে দেওয়া হয়। গ্লুকোজ রোগীর অন্ত্রকে পানি ও লবণ শোষণ করতে সহায়তা করে এবং এর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
রোগী যদি স্যালাইন পান করতে না পারেন তাহলে ন্যাসোগ্যাস্ট্রিক টিউব (nasogastric tube), বা নাকের ভেতরে নল দিয়ে রোগীকে স্যালাইন খাওয়ানো হয়। খাবার স্যালাইন ডায়রিয়া বন্ধ করেনা। এটি শুধুমাত্র শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করে এবং পানিশূন্যতা দূর করার মাধ্যমে রোগের জটিলতা দূর করে। এই রিহাইড্রেশন থেরাপি ডায়রিয়ার কারণে হওয়া মৃত্যুঝুঁকি ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এর সাথে রোগীকে জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টও দেওয়া হয়।
খাবার স্যালাইনের ইতিহাস
খাবার স্যালাইন আবিষ্কারের ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৯৮০ শতকে শুধুমাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং UNICEF এর প্রেসক্রিপশনে প্রদানকৃত বিশেষ পানীয়কেই ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি বলা হতো। কিন্তু এই পানীয় সহজলভ্য ছিলোনা। এজন্য ১৯৮৮ সালে বাড়িতে বানানো পানীয়কে ORS হিসাবে ব্যাবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কলেরা মহামারী আকার ধারন করলে আইভি ফ্লুইড (IV fluid) এর অভাব দেখা দেয়, যেটা ছিলো কলেরার প্রধান চিকিৎসা। সেই সময় একজন ফিজিশিয়ান দিলীপ মহলানবিশ এক ধরনের দ্রবন তৈরী করেন বাসায় পাওয়া যায় এমন কিছু উপাদান দিয়ে। এরপর সেই দ্রবন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ পান করেন ORT হিসেবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই দ্রবন ব্যাপকভাবে ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ব্যাবহৃত হয়ে আসছে।
১৯৮০ সালে বাংলাদেশের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ঘরে ঘরে মায়েদের ওআরএস ব্যাবহার শেখানোর কার্যক্রম শুরু করে। চৌদ্দজন মহিলা এবং একজন পুরুষ কর্মকর্তা বিভিন্ন গ্রামে যেয়ে মহিলাদের এবং তাদের বাচ্চার জন্য ওআরএস ফ্লুইড ব্যাবহারে উৎসাহিত করেন।
তাঁরা মানুষের বাসায় পাওয়া যায় এমন উপকরণ দিয়েই স্যালাইন তৈরী করতে উৎসাহিত করেন এবং ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি রোগে সেটা পান করতে পরামর্শ দেন। এই প্রক্রিয়া টেলিভিশন এবং রেডিওতে প্রচার করা হয় এবং এরপর ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট এর প্যাকেট তৈরী করা হয়। বাংলাদেশে এটি এখন ওরস্যালাইন নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত।
ওরস্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা
খাবার স্যালাইন যেহেতু লবণ-পানির মিশ্রণ, তাই লবণ, পানি ও চিনি আমাদের শরীরে যেসব উপকার করে, সেসব উপকার স্যালাইন খেয়ে পাওয়া যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সুস্থ মানুষের স্যালাইন খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত বমি, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীর থেকে পানি ও লবণের পরিমাণ কমে যায়। এ অবস্থায় খাবার স্যালাইন গ্রহণ করলে সেটা শরীরে পানি ও লবণের অনুপাত ঠিক রাখতে সহায়তা করবে।
খাবার স্যালাইন বানানোর পদ্ধতি
- খাবার স্যালাইনের প্যাকেটে এটির প্রস্তুতপ্রণালী বর্ণনা করা থাকে। প্যাকেটের বর্ণনা অনুযায়ী হাফ লিটার বা আধা সের পানিতে সম্পূর্ণ স্যালাইন পাউডার ঢেলে নিয়ে চামচ দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিলেই তৈরী হয়ে যাবে খাবার স্যালাইন।
- দুধ, ফলের রস, বা অন্য কোনো তরলে ভুলেও এই পাউডার মেশানো যাবেনা।
- এবং, ওরস্যালাইন বানানোর পরও এতে চিনি, গুঁড়াদুধ বা অন্য কোনোকিছু মেশানো যাবেনা।
ঘরে ওরস্যালাইন তৈরির পদ্ধতি
হঠাৎ ডায়রিয়া বা অন্য কারণে পানিশূন্যতা হলে বাড়িতে স্যালাইনের প্যাকেট যদি না থাকে, তাহলে নিজেরাই এটি বানিয়ে নিতে পারবেন। এর জন্য দরকার হবে-
- চিনি/গুড়,
- লবণ এবং
- বিশুদ্ধ খাবার পানি।
প্রথমে এক লিটার খাবার পানিতে একমুঠো ভর্তি করে চিনি/গুড় নিতে হবে। এবার এক চিমটি লবণ যোগ করে চামচ দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিতে হবে। তাহলেই তৈরী হয়ে যাবে ওরস্যালাইন।
খাবার স্যালাইন সংরক্ষণের উপায়
খাবার স্যালাইন সংরক্ষণের জন্য বিশেষ কোনো ব্যাবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।
-
খাবার স্যালাইন সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন।
-
খাবার স্যালাইন বানানোর পর এটি গরম করা থেকে বিরত থাকুন।
-
যে পাত্রে স্যালাইন থাকে সেই পাত্র ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
-
ফ্রিজে স্যালাইন সংরক্ষণ করা থেকে বিরত থাকুন।
-
প্যাকেটের স্যালাইন সংরক্ষণ করতে চাইলে তা সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করুন। ১২ ঘন্টা পার হয়ে গেলে সেটা আর পান না করে ফেলে দিয়ে নতুন করে স্যালাইন তৈরী করুন।
-
বিশুদ্ধ পানি/ফুটানো ঠান্ডা পানিতে স্যালাইন তৈরী করুন।
-
পরিষ্কার পাত্রে স্যালাইন সংরক্ষণ করুন।
এছাড়াও প্যাকেটের গায়ে স্যালাইন সংরক্ষণ পদ্ধতি লেখা থাকে যেটা দেখেও স্যালাইন সংরক্ষণ করতে পারেন।
ওরস্যালাইন খাওয়ার নিয়ম
বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত সকলের জন্য ওরস্যালাইন খাওয়ার নিয়ম এক নয়। CDC বা সেন্টার্স ফর ডিসিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর সূত্রমতে বয়স অনুসারে ওরস্যালাইন খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে-
নবজাতক থেকে শুরু করে ৩৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে
এই বয়সী বাচ্চাদের যাদের ডায়ারিয়া বা পানিশূন্যতা হয়েছে তাদের প্রতিদিন আধা লিটার (৫০০ মিলি লিটার) পর্যন্ত ওরস্যালাইন খাওয়ানো যাবে। তবে একবারে নয়।
প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে অল্প অল্প করে পরিষ্কার চামচে খাওয়াতে হবে। প্রতিবার ১০ থেকে ২০ চা চামচ করে খাওয়ানো যেতে পারে।
৩ বছর তদুর্ধ শিশুদের ক্ষেত্রে
বমি, ডায়ারিয়া বা পানিশূন্যতা থাকলে ৩ বছরের উপরের শিশুদের প্রতিদিন ১ লিটার (১০০০ মিলি লিটার) পর্যন্ত ওরস্যালাইন খাওয়ানো যাবে। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে অল্প অল্প করে খাওয়াতে হবে।
১০ বছরের বেশি বয়সী বাচ্চা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত
প্রাপ্তবয়স্কদের যাদের বমি, ডায়ারিয়া বা পানিশূন্যতা হয়েছে তাদের প্রতিদিন ৩ লিটার (৩০০০ মিলি লিটার) পর্যন্ত ওরস্যালাইন খাওয়ানো যাবে। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে ২৫০ মিলি লিটার ওরস্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।
এর পাশাপাশি তরল খাবার, যেমন স্যুপ, ফলের রস ইত্যাদিও রোগীকে দেওয়া দরকার।
বাচ্চাদের ওরস্যালাইন খাওয়ার নিয়ম এবং কিছু ভুল ধারণা
বাচ্চাদের স্যালাইন খাওয়ানোর ব্যাপারে মায়েদের অনেক প্রশ্ন থাকে এবং না জেনেই অনেকে ভুল করে থাকে। সেগুলি হল-
১. শিশুর বয়স ৬ মাসের কম হলে বাচ্চাকে স্যালাইন দেওয়ার দরকার নেই, মা নিজে খেলেই যথেষ্ট।
আসলে ধারণাটি সঠিক নয়। এটা ঠিক যে, ৬ মাস পর্যন্ত বুকের দুধ ছাড়া অন্য খাবার দরকার নেই, কিন্তু ডায়রিয়া বা অনেক বমি হলে বাচ্চাকেই স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
২. স্যালাইন ফিডারে ঢেলে খাওয়ানো উচিত নয়।
যত ছোট শিশুই হোক না কেন, চেষ্টা করবেন প্রতিবার পরিষ্কার চামচ দিয়ে খাওয়াতে।
৩. অনেকে ভাবেন বাচ্চার জন্য পুরো স্যালাইন পাউডার মেশানোর দরকার নেই।
এটি ভুল ধারণা। নির্দিষ্ট পরিমাণ পানিতেই সবসময় পুরো পাউডার মেশাতে হয়, নাহলে লবণ-পানির অনুপাত ঠিক থাকেনা। আর অনুপাত ঠিক না থাকলে সেই স্যালাইন খেয়ে উপকারও হয়না, অনেক সময় উল্টো ক্ষতিও হতে পারে।
৪. স্যালাইন খেলে ঠান্ডা বা জ্বর, সর্দি হয়!
না, এটা নরমাল পানির মতোই বাচ্চাকে খাওয়ানো যায়। তাই বাচ্চার ঠান্ডা লাগলেও সুস্থ হওয়ার আগে স্যালাইন বন্ধ করা উচিত নয়। আবার স্যালাইনের পানি গরম করাও উচিত নয়।
এই নিয়মগুলো মেনে বাচ্চাকে স্যালাইন খাওয়ালে কোনো ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবেনা।
খাবার স্যালাইন ভুলভাবে বানালে কি ধরণের ক্ষতি হতে পারে?
অনেকেই অনেক অল্প পানিতে স্যালাইন পাউডার মিশিয়ে খেয়ে থাকেন, কারন বেশি পানিতে পাউডার মেশালে পানির স্বাদটা ভালো লাগেনা। আবার অনেকে মনে করেন, অল্প পানিতে বেশি স্যালাইন মেশালে হয়ত সেটা বেশি কার্যকরী হবে। প্রকৃতপক্ষে এটা অত্যন্ত বিপদজনক কাজ। এমনকি অনেকে বাচ্চাদেরও এভাবে স্যালাইন বানিয়ে খাওয়ান, যার কারণে বাচ্চাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্যাকেটের গায়ে যে নির্দেশনা দেয়া থাকে তাতে সাধারণত হাফ লিটার পানিতে স্যালাইন পাউডার মেশাতে বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিমানের চেয়ে কম পানিতে পাউডার দিলে লবণ-পানির অনুপাত ঠিক থাকেনা, লবণের ঘনত্ব বেড়ে যায়।
ফলে অল্প পানি খেলেও শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়, যার ফলে ব্রেইনের কোষ থেকে পানি বের হয়ে আসে। এর ফলে কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়, এমনকি ছোট বাচ্চাদের এভাবে স্যালাইন খাওয়ালে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশনা অনুসরণ করা। এতে করে কোনো জটিলতা সৃষ্টির ঝুঁকি থাকেনা।
ওরস্যালাইন কি সবাই খেতে পারবে?
- অনেক সময় দেখা যায় সুস্থ মানুষও খাবার স্যালাইন গ্রহণ করছেন, এটি শরীরে শক্তি যোগাবে এরকম একটি ধারণা থেকে। কিন্তু ওরস্যালাইন তাদেরই পান করা উচিত যাদের শরীরে পানি এবং লবণের পরিমাণ কোনো কারণে কমে যায়।
- সুস্থ মানুষের খাওয়ার স্যালাইন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এমনকি যাদের মাত্র ১-২ বার পাতলা পায়খানা হয় তাদেরও শুধু পানি পান করাই যথেষ্ট।
- দিনে তিন বারের বেশী পাতলা পায়খানা বা অতিরিক্ত বমি হলে কেবল খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা উচিৎ।
- এছাড়া কোনো অসুস্থতা বা শরীরে পানি ও লবণের স্বল্পতা দেখা না দিলেও কিছুটা স্যালাইন পানি পান করা যায়, কিন্তু তার পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে শরীরে লবণের পরিমাণ বেড়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে ডায়রিয়ার সময় স্যালাইনের কারনে তৈরি হওয়া জটিলতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। এই ছোট ছোট নিয়মগুলোই রোগীর সঠিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করার সময় আমাদের এসব বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।
ওরস্যালাইন খাওয়ার সঠিক নিয়ম নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্নোত্তর
১. খালি পেটে ওরস্যালাইন খেলে কি হয়?
সাধারণত খালি পেটে ওরস্যালাইন না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিছু খাবার আগে খেয়ে নিলে ওরস্যালাইন ভালো কাজ করে এবং এতে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
২. দিনে কয়টা স্যালাইন খাওয়া যায়?
দিনে কতটুকু ওরস্যালাইন খাওয়া উচিৎ তা নিয়ে উপরের আলোচনায় বিস্তারিত দেওয়া আছে। ওরস্যালাইন খাওয়ার পরিমাণ হিসেবে বয়স অনুসারে দিনে অর্ধেক প্যাকেট থেকে শুরু করে ৬ প্যাকেট পর্যন্ত ওরস্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।
৩. গর্ভাবস্থায় ওরস্যালাইন খাওয়া যাবে কি?
জী, গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক নিয়মেই ওরস্যালাইন খাওয়া যাবে।
৪. প্রতিদিন স্যালাইন খেলে কি হয়?
একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ওরস্যালাইন খাওয়ার কোন দরকার নেই। প্রতিদিন ওরস্যালাইন খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।