ইন্টারনেট আসক্তির কারণ! পর্ব-১
ইন্টারনেট আসক্তি নিয়ে সচেতনতা মূলক ধারাবাহিক লেখার এটি ১ম পর্ব। ইন্টারনেট আসক্তির সংজ্ঞা, ইন্টারনেট আসক্তির লক্ষণ ও উপসর্গ এবং কি কারণে ইন্টারনেট আসক্তি সৃষ্টি হয় তাই হচ্ছে আজকের প্রতিপাদ্য বিষয়।
"অন্য যেকোনো প্রযুক্তির মত, ইন্টারনেটেরও রয়েছে ভাল-খারাপ উভয় ব্যবহার। মূলত এটি একটি নিরপেক্ষ বস্তু" --- নোয়াম চমস্কি
কম্পিউটার আবিষ্কারের কিছুকাল পরেই ইন্টারনেট এর ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৬৬ সাল থেকে ইন্টারনেট এর যাত্রা শুরু এবং এর পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে এর অগ্রগতি হতেই থাকে। ইন্টারনেট আবিষ্কারের প্রাথমিককালে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা ও তা উদ্ভাবনের যে উদ্দেশ্য ছিল, সেটি আধুনিক সময়ের ইন্টারনেট ব্যবহারের সাথে সম্পূর্ণই বিপরীত। কারণ সেসময়ে আবিষ্কারকদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি করা এবং সারা পৃথিবীকে নেটওয়ার্কের আওতায় অন্তর্ভূক্ত করা।
কিন্তু ১৯৯৫ সালের পর থেকে ইন্টারনেটের বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয় এর বাণিজ্যিক বিস্তারের মাধ্যমে। আর তখন থেকেই পৃথিবী দেখতে পায় নতুন আলোর মুখ এবং সমগ্র পৃথিবী পরিণত হয় একটি গ্রামে। যা কিনা গ্লোবাল ভিলেজ হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি পায়। কেননা এর পূর্বে যখন মানুষের যোগাযোগা কিংবা যেকোন তথ্য আদান-প্রদানের প্রয়োজন পরতো, সেজন্যে তাদের অনেক কড়িকাঠ গুণতে হতো, তদস্থলে ইন্টারনেটের অগ্রগতির মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ পেতে শুরু করলো অগণিত তথ্যভান্ডার, শিক্ষা, গবেষণা, সামাজিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগের পাশাপাশি সমুদ্রসম বিনোদনের মতো কার্যকর সেবা মাধ্যম।
কিন্তু আমরা সবাই জানি, দিনের আলো শেষ হলেই আসে রাতের অন্ধকার। প্রদীপের বিপরীতে থাকে আধাঁর এটাই চিরন্তন সত্য কথা। ইন্টারনেট আমাদের জীবনে অসামান্য আশির্বাদ হয়ে আবির্ভাব হলেও এর ফলে সারা পৃথিবীর মানুষ এখন এক ভয়াবহ হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। মানবেতর জীবনযাপনের ক্ষেত্রে নৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ঘটছে অবর্ণণীয় অবক্ষয়।
ইন্টারনেট আসক্তি কী?
সাধারণত ইন্টারনেট আসক্তি বলতে বুঝায় অনলাইন সম্পর্কিত যে কোন ধরনের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, যার দ্বারা স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হারুন উর রশিদ এর মতে, “যখন কোন ব্যক্তি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে এর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ইন্টারনেট ব্যবহার ব্যতিত সে থাকতে পারেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে তার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। ইন্টারনেট ছাড়তে গেলেই তার তীব্র তাড়না কাজ করে, অস্থির লাগে ও ইন্টারনেট ব্যবহার করার কারনে সে ব্যক্তির ক্ষতি হচ্ছে জেনেও সে ব্যবহার বন্ধ করতে পারছেনা তাকেই ইন্টারনেট আসক্তি বলে।”
গবেষকদের মতানুসারে, “ইন্টারনেট আসক্তি হলো একটি মানসিক রোগ। যার ফলে মানুষ কম্পিউটারে অথবা স্মার্টফোনে অনেক সময় ব্যয় করে এবং এর মাত্রা অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে তাদের স্বাস্থ্য, কর্ম জীবন, টাকা-পয়সা ও সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলে।”
ইন্টারনেট আসক্তির লক্ষণ
আচরণগত লক্ষণ
-
কাজের প্রতি অনিহাঃ সময়ে অসময়ে ইন্টারনেটে প্রবেশ করা এবং ব্যক্তিগত কাজে অনাগ্রহ তৈরি।
-
কাজের সময়সূচীতে অনিয়মঃ ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতীতের সময়সূচী এবং বর্তমান সময়সূচীতে যাদের বিস্তর ফারাক রয়েছে। অর্থাৎ পূর্বে কেবল নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয় অনুসন্ধান কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবহারে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
-
ইন্টারনেটকে অত্যাধিক গুরুত্ব প্রদানঃ কোন ব্যক্তির কাছে যখন ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ইউটিউব, মেসেঞ্জারসহ ইন্টারনেটই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বের বিষয় তখন বুঝতে হবে, ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
অনিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট ব্যবহারঃ কোন ব্যক্তির ইন্টারনেট ব্যবহারকে কেন্দ্র করে যখন তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং পরিবারের অসংখ্য সমস্যা এর দ্বারা গঠিত, তখন সেই ইন্টারনেট ব্যবহার আসক্তির কারন হয়ে দাড়ায়।
-
দৈনন্দিন কাজকে মূল্যায়ন না করাঃ যখন কারো ইন্টারনেট ব্যবহার এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে, তার কাছে ব্যক্তিগত কাজ, পড়াশোনা, অফিসের কাজ, ঘুম ও বিশ্রাম এমনকি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও মূল্যবোধ কমে যায়, সে নিঃসন্দেহে আসক্ত।
-
ইন্টারনেট ব্যবহার পরিত্যাগ করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়াঃ এছাড়া কেউ যখন তার ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে স্বজনদের মিথ্যে বলে এবং বারবার ইন্টারনেট ব্যবহার করা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে, তাহলে সে ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
স্ক্রিন আসক্তিঃ যে ব্যক্তি অন্তত দৈনিক ১২০ থেকে ১৫০ বার তার স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে বা ইন্টারনেট আপডেট পাওয়ার আশায় কম্পিউটারের মনিটরে তাকায়, সে মারাত্মকভাবে আসক্তিতে ভোগছে।
-
বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম যখন ইন্টারনেটঃ যার কাছে ইন্টারনেটই একমাত্র আনন্দ কিংবা বিনোদনের জায়গা, এর বাইরে সবই অস্বস্তিকর সে-ই ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
স্বভাব চরিত্রের অবনতিঃ ইন্টারনেটে আসক্ত ব্যক্তির মধ্যে চরিত্রগত, স্বভাবগত ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তণ লক্ষ্য করা যাবে এবং অনেক বদভ্যাসের লক্ষণ ফুটে ওঠবে। যেমন- শৃঙখলা ভঙ্গ, অনেক রাত জাগা, সারাদিন ঘুমানো বা সকালে দেড়ি করে ঘুম ভাঙ্গা, চোখ-মুখ অবসন্ন লাগা ও চেহেরা ফ্যাকাশে দেখানো এবং অমার্জিত বা অশালীন ব্যবহার।
-
রুচিগত পরিবর্তনঃ রুচিগত কিংবা পছন্দের পরিবর্তন। অত্যাধিক ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে সে ব্যক্তির ফ্যাশন, স্টাইল ও বাক্য বিনিময়ের সময় নিজস্বতা কমে যাবে এবং সে সর্বক্ষণ যেসবের মধ্যে নিমজ্জিত থাকে সেসবের প্রভাব বহিঃপ্রকাশ হবে।
-
অস্বাভাবিক যৌণ আকাঙ্ক্ষাঃ ইন্টারনেটে আসক্ত ব্যক্তি সর্বদা ইন্টারনেটে পর্ণোসাইট ভিজিট করার ফলে নিজ সঙ্গীর সাথেও মাত্রাতিরিক্ত যৌন চাহিদা মিটাতে চাইবে এবং বেপরোয়া আচরণ লক্ষ্য করা যাবে। স্বাভাবিক আচরণে পরিবর্তন দেখা যাবে।
শারীরিক লক্ষণ
-
যৌন চাহিদা হ্রাস পাওয়াঃ কখনো কখনো যৌন ক্ষমতা ও যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যায় এবং সহধর্মীনিকে সময় না দিয়ে ইন্টারনেটে ব্লু-ফিল্ম কিংবা পর্ণো সাইটে আসক্ত হয়। ফলে যৌনাঙ্গের চরম ক্ষতি হওয়ার ফলে সে স্বাভাবিক যৌন জীবন এড়িয়ে চলতে থাকে। এরূপ লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে সে ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
খাবারের প্রতি অনিহাঃ ইন্টারনেট ব্যবহারে সর্বদা আধুনিকতার স্পর্শে থাকার ফলে খাদ্যাভ্যাসে ও চলন-বলনে পরিবর্তন দেখা গেলে বুঝা যাবে সে ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
নেশাদ্রব্যের প্রতি আগ্রহ ও আসক্ত হওয়াঃ ইন্টারনেটে দীর্ঘসময় পার করতে গিয়ে নেশাজাতীয় দ্রব্যের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। কেননা যারা ঘন্টার পর ঘন্টা অনলাইনে সময় কাটায় সেসময়ে তাদের ক্লান্তি ও একঘেয়েমি কাটাতে প্রচুর সিগারেট ও মদ্যপান করার প্রবণতা তৈরি হয়। এভাবে প্রচন্ড রকমের ধূমপান বা অন্য নেশাদ্রব্যে আসক্ত হতে দেখলে বুঝতে হবে, নিশ্চয় এর পিছনে ইন্টারনেট আসক্তির কারণ থাকতে পারে।
মানসিক লক্ষণ
-
মানসিক সমস্যাঃ ইন্টারনেট থেকে বের হলেই যদি কারো বিষন্নতা, অস্থিরতা ও অপ্রসন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে বুঝা যাবে সে ব্যক্তি ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
পারস্পরিক যোগাযোগে অনিহাঃ পারিবারের সদস্যদের সাথে এবং বাহিরের মানুষের সাথে যোগাযোগ কমে যাবে এবং সবসময় ব্যস্ততা দেখানোর মাধ্যমে যেকোন বিষয় এড়িয়ে চলতে থাকলে বুঝা যাবে, তার সময় কাটানো কেন্দ্রীয় স্থান ইন্টারনেট।
-
মিথ্যে বলার প্রবণতাঃ ইন্টারনেটে আসক্ত ব্যক্তি প্রায়শই মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলবে এবং অনেক কিছু লুকানোর চেষ্টা করবে।
-
ব্যক্তিত্বের পরিবর্তনঃ ইন্টারনেট আসক্তির ক্ষেত্রে খুব সাধারণ একটি লক্ষণ হলো ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন। ইন্টারনেটে আসক্ত ব্যক্তির মেজাজ যেকোন সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং যেকোন ব্যক্তির সাথে অসদাচারণ করতে পারে। এমনকি পরিবারের সাথে ভাঙ্গন এবং জীবন সঙ্গীকে ছেড়ে বিকল্প সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়তে পারে। কখনো কখনো একজনের একাধিক প্রেমিক-প্রেমিকা থাকতে পারে এবং বহুবিবাহে জড়াতে পারে।
-
সম্পর্কে বিচ্ছেদঃ বৈবাহিক কিংবা ভালবাসার সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে। কেননা অতিমাত্রায় অনলােইনে সময় কাটানোর মাধ্যমে নতুন সম্পর্ক তৈরি হতে পারে এবং বিদ্যমান সম্পর্কে অনিহা আসতে পারে।
-
ইন্টারনেটকে সকল সমস্যার সমাধান মনে করাঃ যদি কোন ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হয় যে, আপনার মানসিক প্রশান্তি পেতে, অস্থিরতা দূর করতে, বিরক্তিকর অবস্থায় এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট কী যথেষ্ট? সে যদি উত্তরে হ্যা বলে, তাহলে সে ইন্টারনেটে আসক্ত।
শিশুদের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট আসক্তির লক্ষণ
-
পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজে অমনোযোগী হওয়াঃ শিশু-কিশোরদের মাত্রাতিরিক্ত কম্পিউটার বা মোবাইলের প্রতি ঝোক এবং ইন্টারনেট ছাড়া অন্যসব ক্ষেত্রে অমনোযোগী হওয়া।
-
গোপনে ইন্টারনেট ব্যবহার করার চেষ্টাঃ শিশুদেরকে দিনে ছয় ঘন্টার বেশি অনলাইনে নিমজ্জিত থাকলে ও লুকিয়ে লুকিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখলে বুঝতে হবে সে আসক্তির দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
-
মোবাইল বা ইন্টারনেট যখন ভাল লাগার উৎসঃ শিশুদের দিকে খেয়াল করতে হবে, তারা দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটে ব্যবহার করছে কিনা এবং মোবাইল-কম্পিউটার না পেলে তাদের বিষন্নতা ও বিরক্তবোধ করে কিনা। ইন্টারনেট পেলেই সে খুব আনন্দিত হচ্ছে কিনা, তা খেয়াল করতে হবে। যদি তারা এসব ছাড়া থাকতে অস্বস্তি বোধ করে, তাহলে বুঝতে পারবেন সেই শিশুটি ইন্টারনেটে আসক্ত।
-
ঘুমের পরিমাণঃ যেসব শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহারে মজা পেয়ে যায়, তারা যেকোন সময় ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ খোঁজবে। এছাড়া রাতে বাবা-মাকে ফাঁকি দিয়ে না ঘুমিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকে প্রাধান্য দিবে।
-
বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনকে এড়িয়ে চলাঃ শিশুদের অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বাবা-মায়ের সাথে কথা-বার্তা কমিয়ে দেয়া এবং তাদের যেকোন নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়া। এমনকি বাবা-মাসহ আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা দেখলে তার ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ লক্ষ্য করতে হবে। কারণ ইন্টারনেট আসক্তির ফলে শিশু ও অভিবাবকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
-
মিথ্যে বলাঃ শিশুরা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়লে যেকোন শর্তে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাইবে। ইন্টারনেটে আসক্ত শিশুদের মধ্যে বাবা-মাকে মিথ্যে বলার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই কোন শিশু মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য যখন অনেক অজুহাত খোঁজে তখন বুঝতে হবে সে মিথ্যে বলছে এবং সে ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
-
নতুন বন্ধু তৈরি ও অস্বাভাবিক আচরণঃ শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহারের মধ্য দিয়ে অনেক নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করে ও তাদের সাথে ভার্চুয়াল সম্পর্ক গড়ে তোলে। বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তাদের আচরণে অনেক পরিবর্তন আসে।
-
ক্ষিপ্ত আচরণঃ শিশুদের চাহিদামত ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধা দিলে যখন সে রেগে যায় এবং ক্ষিপ্ত হয়ে ভাংচুর বা অন্যান্য প্রতিক্রিয়া দেখায়, তখন বুঝতে হবে সে ইন্টারনেটে আসক্ত হচ্ছে।
ইন্টারনেট আসক্তি কী কারণে সৃষ্টি হয়?
আধুনিক পৃথিবীর সব থেকে ব্যস্ত থাকার মাধ্যম হলো ইন্টারনেট। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষার্জনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের আবশ্যকতা অপরিহার্য। আজকাল যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বপ্রথম আমরা ইন্টারনেটকেই নির্ভরযোগ্য মনে করি। আর সেই নির্ভরশীলতা থেকে যখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত আমরা ইন্টারনেটে সময় ব্যয় করি তখন আমাদের ব্যক্তিগত, শারীরিক ও নানা রকম পারিবারিক সমস্যায় পতিত হই।
মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয় আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন। আর এই অনিয়ম ও অনিয়ন্ত্রিত সময় ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যয়ের ফলে হয়ে যেতে পারে অনেক বড় ক্ষতি। সেজন্যে আমরা একে বলি ইন্টারনেটে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের নাম আসক্তি। ইন্টারনেট আসক্তি এক ধরনের ব্যাধি হিসাবে পরিচিত। তাহলে চলুন জেনে নেই কি কি কারণে ইন্টারনেট আসক্তি সৃষ্টি হয়,
নির্ভরশীলতাঃ ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটে অতিবাহিত করার পর তা একধরনে অভ্যাসে পরিণত হয়। যার ফলে ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হয়, যা কিনা মাদকাসক্তের সাথে তুলনা করা যায়।
অজানাকে জানা ও দেখার আগ্রহ ও কৌতুহলঃ যাদের কাছে ইন্টারনেট একেবারেই নতুন তাদের কাছে ইন্টারনেট অনেকটা ম্যাজিকের মতো। কেননা মুহুর্তের মধ্যে তারা যা চাচ্ছে তাই চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে। নতুন তথ্য জানতে এবং বিভিন্ন অজানা বিষয় আবিষ্কার করতে তাদের চিন্তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। আর একটি লিঙ্কে ঢোকার সাথে সাথে অন্যান্য লিঙ্কে আরোও আকর্ষণীয় লিঙ্কে প্রবেশ করতে তা তাদের মনকে তাড়িত করে। এভাবে এক সাইট থেকে অন্য সাইটে ঘুরাঘুরি করে তারা নতুন আনন্দ ও বিনোদনের উৎস খোঁজে পায় এবং এর মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি পার করে দেয় ঘন্টার পর ঘন্টা।
একাকীত্বতা ও অলস সময়ঃ আমাদের সারাদিনের কাজের শেষে যখন ব্যক্তিগত মুহূর্ত অতিবাহিত করতে কিংবা ব্যক্তিগত ব্যাপার গুলো কারো সাথে যখন শেয়ার করতে পারিনা তখন আমরা বিকল্প মাধ্যম খুঁজি যাতে আমাদের সুপ্ত কথা গুলো প্রকাশ করতে পারি। এছাড়াও অনেকে পরিবারের লোকজন নানা কাজে ব্যস্ত থাকে তখন সে বাসায় একা থাকে। করার মতো কোন কাজ না থাকার ফলে সময় কাটানোর জন্য ইন্টারনেট একমাত্র সঙ্গী হিসাবে কাজ করে। সকল প্রকার তথ্য ও বিনোদনের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই সময় কেটে যায়। যার ফলে ইন্টারনেটে আসক্তি তৈরি হয়।
নতুন বন্ধু-বান্ধব কিংবা নতুন সম্পর্ক গড়ার মাধ্যমেঃ মানুষের মানসিক প্রশান্তির জন্য এবং ব্যক্তিজীবনে কারো সাথে সম্পর্ক করার জন্য যখন কেউ স্বাভাবিক ভাবে ব্যর্থ হয়, তখন অনলাইনে অপরিচিত মানুষের সাথে বন্ধুত্ব কিংবা নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন অপরিচিত মানুষকে বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট পাঠানো ও তাদের সাথে সংযুক্ত হয়ে দীর্ঘ কাল ধরে কথোপকথনের মধ্য দিয়ে দিনের পর দিন চলে যায়। যার ফলে ইন্টারনেট আসক্তিতে আক্রান্ত হয়।
ভার্চুয়াল সেক্স বা সাইবার সেক্সঃ অসংখ্যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি অবাঞ্ছিত আকাঙ্খা অথবা যৌন তাড়নার ফলে অনলাইনে বিভিন্ন পর্ণসাইটে প্রবেশ করে লম্বা সময় অতিবাহিত করে। এমনকি কিছু সাইভার সেক্স ওয়েবসাইটে ভার্চুয়াল সেক্স চ্যাটিং এর মাধ্যমে দিনের পর দিন অনেক ব্যক্তি ইন্টারনেটে আসক্ত হয়।
অনলাইন গেমসঃ অসংখ্য মানুষ আছে যারা ইনডোর কিংবা আউটডোরে খেলাধূলা করার থেকে মোবাইলে অথবা কম্পিউটারে খেলাধূলা করে সময় কাটাতে পছন্দ করে। কিছু কিছু গেমসের ক্ষেত্রে অনেকে মিলে অনলাইনে খেলায় অংশ নেয়। অসামান্য আনন্দ ও খেলায় বারবার জেতার আকাঙ্খা থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা এসব অনলাইন গেমে সময় কাটিয়ে দেয়। যা কিনা ইন্টারনেট আসক্তির জন্য খুবই সহজ মাধ্যম।
বিনোদনের বিকল্প মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেট ব্যবহারঃ প্রচলিত সকল বিনোদন মাধ্যমেই সীমাবদ্ধতা ও ধরাবাধা নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং অর্থবহ। কিন্তু ইন্টারনেটে বিনোদন মাধ্যম খুবই অসীম এবং তুলনামূলক সাশ্রয়ী। সাধারণত সিনেমা, নাটক, গান, অনলাইন টিভি, ভিডিও গেমস এবং অন্য সকল বিনোদনের ক্ষেত্রে খুবই সহজে এক্সেস পাওয়া যায় বলে অন্যান্য বিনোদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটকে অগ্রাধিকার দেয়। আর তাই প্রতিদিন নতুন নতুন সকল বিনোদনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা হারিয়ে ডুবে থাকে।
আত্মপ্রচারণা ও আত্মপ্রতিষ্ঠার চেষ্টাঃ অসংখ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে যারা মূলত নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্য কিংবা ব্যক্তিগত গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ করতে ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার. ইউটিউব এর পাশাপাশি ব্লগ ও ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রকমের লিখিত কন্টেন্ট অথবা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে মানুষের সম্মুখে জাহির করতে চায়। বেশি ভিউয়ার ও লাইক পাবার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় যাতে করে অতিদ্রুত সেলিব্রেটি বনে যাওয়া যায় ও প্রতিষ্ঠা লাভ করা যায়। সেই জন্য সর্বদা তাদের চোখ থাকে ইন্টারনেটের উপর এবং যেনো যেকোন প্রকার আপডেট তারা মিস না করে ফেলে।
কিন্তু তারা বুঝতেই পারেনা এতে তাদের ইন্টারনেট আসক্তির মতো বাজে অভ্যাস গড়ে তুলছে। ভিন্নধর্মী বিনোদন তৈরী করার প্রয়াসঃ অসংখ্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতিনিয়ত নানা রকমের ভিডিও, ক্ষুদ্রাকৃতির সিনেমা ও নাটক বানিয়ে অথবা কৌতুক, ট্রল, টিকটক, ক্রিয়েটিভ কাজের রিভিউ, ফেইসবুক লাইভ, উপস্থাপনা ও প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে তারা একটি বিনোদনের উৎস বানিয়ে সেটাকে ইউটিউব, ফেইসবুকসহ সকল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে। এই প্রক্রিয়ায় তারা নিজেরা যেমন সর্বদা অনলাইনে থাকে তেমনি, একটা গ্রুপ যারা তাদের এসব ভিডিও পছন্দ করে, মন্তব্য করে এবং শেয়ার করে সেই সব অডিয়েন্সরাও ইন্টারনেট আসক্তির গন্ডিতে আবদ্ধ হয়।
অল্প পরিশ্রমে প্রচুর অর্থোপার্জনের চেষ্টাঃ ইন্টারনেটের সহজলভ্য সুযোগ-সুবিধাকে পুঁজি করে অনেকেই অল্প জ্ঞান বা অল্প দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও দিনরাত টাকা আয় করার জন্য ইন্টারনেটে পড়ে থাকে এবং বিভিন্ন রকমের কৌশল অবলম্বন করে নানান ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করতে থাকে। কেউ কেউ আবার ফেইসবুকে কিংবা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন অপরিচিত মানুষের সাথে প্রতারণা করে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা চালায়। এতে যেমন তাদের নৈতিকতার অবক্ষয় হয়, অন্যদিকে তৈরি হয় ইন্টারনেট আসক্তি।
একগেয়েমি ছাড়াতেঃ ব্যক্তিগত কিংবা কর্মজীবনে প্রচন্ড ব্যস্ততা হতে সামান্য হালকা হবার জন্যে অথবা লেখাপড়ার চাপ থেকে কিছু মুক্ত থাকার জন্যে অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘুরাঘুরি, অনলাইন গেমস খেলা, ভিডিও দেখা ও বন্ধুদের সাথে লাইভে আড্ডা দেওয়ার মধ্য দিয়ে একগেয়েমি কাটাতে চায়। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে এর ব্যবহারের ফলে ইন্টারনেটে আসক্ত হচ্ছে।
রাত জাগার কারণেঃ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই একদল মানুষ আছে যারা কাজে অকাজে রাত জাগে। অনেকের আবার দীর্ঘ দিনের রাত জাগা অভ্যাসের কারনে ইন্টারনেট ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সময় অতিক্রম করে। এতে তাদের আসক্তি দিনের পর দিন বাড়তে থাকে।
ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারের সহজলভ্যতাঃ তথ্য অনুসন্ধান এবং যেকোন মানুষের সাথে যোগাযোগ করার পাশাপাশি প্রতিদিনের অসংখ্য কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ইন্টারনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকিয়া। এটি নিজেই একটি সেবামাধ্যম এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদেরকে তা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তা প্রবেশাধিকার প্রদান করে। গণতন্ত্রে অংশগ্রহণ ও সামাজিক অর্ন্তভূক্তির জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইন্টারনেট সেবা সকলের জন্য প্রবেশযোগ্য ও ব্যয় সাপেক্ষ এবং এটি নির্ভরযোগ্য ও সর্বদাই সহজলভ্য। কিন্তু ইন্টারনেট আসক্তির ক্ষেত্রে এই ইন্টারনেটের সহজলভ্য প্রবেশাধিকারই যম হয়ে দাড়িয়েছে।
ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সহজ ও সাশ্রয়ীঃ প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে তো কোন প্রকার বাধা-বিপত্তি ছাড়াই শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ক্রয় করলেই মোবাইলে অথবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন পেয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়ার সাথে সাথেই যেকোন ব্যক্তি তার ইচ্ছানুযায়ী যেকোন ধরনের বিনোদন, তথ্য খোঁজ করা ও চাহিদা অনুযায়ী ইচ্ছা মাফিক ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানোর অধিকার পেয়ে যায়।
সন্তানকে সময় দিতে না পারা ও সন্তুষ্ট রাখতে গিয়েঃ শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে অভিবাবক বা বাবা-মায়েরা অনেকাংশে দায়ী। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার সহায়তা বা নিজেদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকার ফলে তাদের সময় না দিতে পেরে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ করে দেন। কিন্তু প্রথমদিকে তারা বুঝতেও পারেন না, যে কিভাবে স্বাভাবিক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের অস্বাভাবিক ইন্টারনেট ব্যবহার প্রবণতা বেড়ে যায়। ছেলে-মেয়েরা হাতের নাগালে সকল কিছু পেয়ে পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজের রোটিনের বাইরে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য লম্বা রোটিন করে নেয়। দিনের পর দিন এমন ধারাবাহিক নির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে হয়ে ওঠে ইন্টারনেটে আসক্ত।
বন্ধু-বান্ধবের দ্বারা প্রণোদিত হওয়ার মধ্যদিয়েঃ বাড়ন্ত বয়সী ছেলে-মেয়েরা তাদের মাত্রাতিরিক্ত কৌতুহল মিটাতে বাবা-মায়ের কাছে আবদার করে এন্ড্রয়েড বা স্মার্ট ফোন দেবার জন্যে। কখনো কখনো নিজেদের জমানো টাকায় বা কারো কাছ থেকে ধার করে হলেও গোপনে মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। কেউ কেউ আবার বন্ধু-বান্ধবের বা বড় ভাই-বোনের মোবাইল নিয়ে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার করে।
ইন্টারনেট প্রবেশধারিকারের ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশঃ অনেক দক্ষ কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র-ছাত্রী বা কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে পারদর্শী ছেলে-মেয়েরা অন্য কারো ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ও ওয়েবসাইট হ্যাক করে তাদেরকে হয়রানি করে এবং সেসব একাউন্ট বা ওয়েবসাইটের ডাটা বা তথ্য কেলেংকারীর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
আইনী তদন্তের ক্ষেত্রেঃ অন্যদিকে কোন কোন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ও সাইবার অপরাধের তদন্ত সাপেক্ষে আইন-শৃংখলা বাহিনী তাদের সকল প্রকার গোপনীয় তথ্য ও ডাটা অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। ফলে তারা যেকোন ব্যক্তির একাউন্ট বা ওয়েবসাইটের কন্ট্রোলপ্যানেল বা ড্যাশবোর্ড এ অনুপ্রবেশের অধিকার সংরক্ষণ করে।
আধুনিক পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের জন্য ইন্টারনেট আশীর্বাদ স্বরূপ। কিন্তু এ ইন্টারনেটই আবার যে কোন মানুষের জীবনে হয়ে ওঠতে পারে ভয়ংকর বিপদের কারণ বা অভিশাপ, যদি না এটির যথাপযোক্ত ব্যবহার না করা হয়। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্বেই জেনে নিতে হবে এর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে।
আশা করি ইন্টারনেট আসক্তি নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে গেছেন। আগামী পর্বে ইন্টারনেট আসক্তির বিভিন্ন ধরন এবং বিশ্ব ও বাংলাদেশে এর অবস্থার উপর আলোকপাত করব।