ঋতু পরিবর্তনের সময় ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি রোগ এবং তাদের প্রতিরোধের উপায়

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে আবহাওয়ার তারতম্যের সাথে সাথে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। ফলে আপনি খুব সহজেই এলার্জি, সাইনোসাইটিস, গলা ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি ও জ্বরের মতো কিছু যন্ত্রণাদায়ক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই আসুন ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগসমূহ এবং তাদের প্রতিরোধক টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

দীর্ঘ উপকূলরেখা এবং ৮০ শতাংশ প্লাবনভূমির ব-দ্বীপ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি বহুল আলোচিত। ঋতুর পরিবর্তন রোগ ব্যাধির মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। শরৎকালে ভ্যাপসা গরম শেষে, হুট করে এক পশলা বৃষ্টি, তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে নামিয়ে আনে। 

আবার হেমন্তের সকালে কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে গুটি গুটি পায়ে শীত এসে শরীরের তাপমাত্রা শুষে নেয়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। এই সুযোগে ভাইরাসগুলো সহজেই আপনার শরীরে প্রবেশ করে। তখন এলার্জি, সাধারণ সর্দি-জ্বর, ফ্লু, গলা ব্যথা, তীব্র ব্রংকাইটিস, সাইনোসাইটিস, ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্টের মতো রোগসমূহ, আপনার শরীরে বাসা বাধে। ফলস্বরূপ,  আক্রান্ত হবার পর আপনার শারীরিক অবস্থার সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্য ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।

তবে ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগসমূহ আপনার কম বয়সী শিশু বা বয়স্কদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শিশু ও বয়স্কদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং আক্রান্ত হবার পর শরীর পূর্বের অবস্থায় ফিরতে সময় নেয়। তাই আপনার সুবিধার্থে গুরুত্বপূর্ণ ১১টি ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগ এবং রোগসমূহ প্রতিরোধের কার্যকর টিপস নিয়ে আজকের আর্টিকেল সাজানো হয়েছে। কার্যকর এই টিপসগুলো সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই পড়তে থাকুন।

 

ঋতু পরিবর্তনজনিত ১২ টি রোগ এবং প্রতিরোধক টিপস 

 

১. এলার্জি

শরীরে এলার্জির প্রাদুর্ভাব বিশেষত শরৎকাল থেকেই শুরু হয় এবং বেশিরভাগ সময় শীতকাল পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। শরৎকালে মূলত আর্দ্র আবহাওয়ায় বিরাজ করে, যা বিভিন্ন ছত্রাক এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তৈরির অনুকুল। স্পোর ও এমন আবহাওয়া এলার্জির সবথেকে বড় উত্তেজক। তাছাড়া, আর্দ্র আবহাওয়ার মাসগুলোতে ধুলোয় বাস করা মাইটগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায়। তাই লক্ষণ অনুযায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। 

লক্ষণসমূহ 

  • চোখ জ্বালাপোড়া ও চোখে পানি আসা

  • সর্দি বা নাক বন্ধ

  • নাকে বা গলায় চুলকানি

  • হাঁচি

  • নাকে কোন গন্ধ অনুভব না করা 

  • নিশ্বাসে নাক থেকে শব্দ 

  • মাথাব্যথা

  • গলা ব্যথা

  • ক্লান্তি

  • কাশি

প্রতিরোধক টিপস

  • যথাসম্ভব বাড়িতে থাকার চেষ্টা করুন

  • বাইরে বের হলে গাড়ির জানালা বন্ধ রাখুন।

  • মাস্ক ব্যবহার করুন।

  • বাইরে কোন কাজে বেরোনোর পূর্বে আপনার শহরের বাতাসের আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রার বিষয়ে জেনে নিন। 

  • বাইরের কাজ থেকে ফিরে সম্ভব হলে গোসল করে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

 

২. সাধারণ সর্দি

আপনি বছরের যে কোন সময়ে সাধারণ সর্দিতে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাছাড়া এটি সংক্রামক প্রকৃতির অসুস্থতা, যা কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

লক্ষণসমূহ 

  • জ্বর জ্বর ভাব

  • সর্দি

  • শরীর ব্যথা বা মাথাব্যথা

  • কাশি

  • হাঁচি

  • গলা ব্যথা

প্রতিরোধক টিপস

  • বিছানায় যাবার বা খাবার পূর্বে সঠিকভাবে আপনার হাত ধুয়ে নিন।

  • আপনার শরীরের তাপমাত্রা ঘন ঘন পরিমাপ করুন।

  • পাতলা, নরম সুতি পোশাক ব্যবহার করুন।

  • সুষম খাদ্য এবং বেশি পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

  • হাঁচি বা কাশির সময় নাক ও মুখ ঢেকে রাখুন, প্রয়োজনে আলাদা নরম পরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করুন।

  • যথাসম্ভব জনসমাগম পূর্ণ জায়গা এড়িয়ে চলুন।

 

অ্যালার্জি নাকি সাধারণ ঠান্ডা! বুঝবেন যেভাবে

 

৩. ফ্লু

ফ্লু সাধারণ সর্দির মতো লক্ষণ প্রকাশ করে। তবে সাধারণ সর্দিতে আপনার তেমন জটিল কোন শারীরিক সমস্যা না হলেও, ফ্লু গুরুতর হয়ে উঠতে পারে এবং শেষ পরিণতি ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়াতে পৌঁছাতে পারে। বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের জন্য ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া মৃত্যু ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের একটি রিপোর্ট অনুসারে, মৌসুমী ফ্লু বা জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা এবং অনেক সময় মৃত্যু ঘটায়। 

লক্ষণসমূহ 

  • ডায়রিয়া

  • গুরুতর শারীরিক অবসাদ

  • বমি বমি ভাব অথবা বমি

  • শরীর ব্যথা

  • শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব হওয়া

  • ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া

  • মাথাব্যথা

  • জ্বর

  • ক্রমাগত কাশি

  • গলা ব্যথা

  • কাশির সময় বুকে চাপ অনুভব করা 

প্রতিরোধক টিপস

  • আপনার দুই হাত সঠিকভাবে এবং ঘন ঘন পরিষ্কার করুন।

  • জনসমাগম পূর্ণ জায়গায় এড়িয়ে চলুন।

  • হাঁচি বা কাশির সময় যথাসম্ভব নাক ও মুখ ঢেকে রাখুন।

  • আলাদা নরম পরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করুন।

  • পাতলা সুতি পোশাক ব্যবহার করুন।

  • সুষম খাদ্য এবং বেশি পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করুন।

 

সাধারণ ফ্লু নাকি করোনা ভাইরাস, উপসর্গ চিনবেন যেভাবে

 

৪. গলা ব্যথা

ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় আপনি গলায় ফোলা ভাব বা তীব্র ব্যথা অনুভব করতে পারেন। যদিও গলা ব্যথা, এলার্জি, সাধারণ সর্দি এবং ফ্লুর একটি সাধারণ উপসর্গ। 

লক্ষণসমূহ 

  • কর্কশ কন্ঠ বা গলার আওয়াজ অদ্ভুত হয়ে যাওয়া

  • খাবার গিলতে সমস্যা

  • গলায় গ্রন্থি (টনসিল) ফুলে যাওয়া

  • ক্ষুধামন্দা

  • ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া

  • চোখ চুলকানো এবং চোখ দিয়ে পানি পড়া

  • পেশী এবং শরীরের ব্যথা

  • বন্ধ নাক 

প্রতিরোধক টিপস

  • জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলুন।

  • খাবার খাওয়ার পূর্বে সঠিকভাবে হাত ধুয়ে নিন।

  • আপনার নাক মুখ যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন বা মাস্ক ব্যবহার করুন।

  • আপনার খাবার প্লেট, গ্লাস এবং বিছানা আলাদা করুন।

 

৫. তীব্র কানের সংক্রমণ

কানের সংক্রমণ, মধ্যকর্ণে বা অন্তঃকরণে প্রদাহ ভাইরাসের দ্বারা সৃষ্ট হয় এবং অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শরত্কালে এ রোগের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শিশুদের কানের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়।

লক্ষণসমূহ 

  • কানে ব্যথা

  • কানের শ্রবণশক্তি হ্রাস

  • বমি

  • ডায়রিয়া

  • কান পানি পূর্ণ এমন অনুভব করা

  • মাথা ঘোরা

প্রতিরোধক টিপস

  • ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করুন।

  • কানের মধ্যে তুলো, কাঠি বা ধারালো কিছু দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন।

  • গোসলের সময় কানে পানি প্রবেশ রোধ করুন। এবং গুরুতর প্রয়োজনে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

 

৬. তীব্র ব্রংকাইটিস

তীব্র ব্রঙ্কাইটিস ফুসফুসের সংগঠিত সংক্রমণ জনিত রোগ, যা সাধারণত ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। তবে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রভাবে সংঘটিত তীব্র ব্রঙ্কাইটিস ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় অধিক বিস্তার লাভ করে।

লক্ষণসমূহ 

  • বুকে চাপ অনুভব করা 

  • ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পাওয়া

  • নিঃশ্বাসে দুর্বলতা বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

  • শরীর ব্যথা

  • কাশিতে সবুজ, পরিষ্কার বা হলুদ শ্লেষ্মার উপস্থিতি

  • ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া

  • গলা ব্যথা

প্রতিরোধক টিপস 

  • ধুমপান সম্পূর্ণ রূপে ত্যাগ করা।

  • এলার্জি উদ্যোগকারী উৎসেচকগুলো যেমন পোষা প্রাণী, ধোঁয়া, বাষ্প বা ধূলিকণা থেকে দূরে থাকুন। 

  • পুরাতন পোশাক পরিধান বা বদ্ধ ঘরে প্রবেশ হতে বিরত থাকুন। 

  • নিজের বসবাসের জায়গা সর্বদা ধূলিকণা এবং জীবাণুমুক্ত রাখুন।

 

৭. আর্থ্রাইটিস বা বাত

আর্থ্রাইটিস বা বাত হল গিঁট বা জয়েন্টের প্রদাহ। আর্থ্রাইটিস যদিও সারা বছরব্যাপী থাকে। তবে আর্থ্রাইটিস হলে বেশিরভাগ রোগী জানায়, ঠান্ডা এবং স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় তাদের শারীরিক অবস্থা অধিক নাজুক হয়ে যায়। 

লক্ষণসমূহ 

  • গিঁটে ব্যথা

  • ক্লান্তি

  • গিঁট বা জয়েন্টে ফোলাভাব

  • গিঁট বা জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া

  • গিঁট বা জয়েন্ট ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া

প্রতিরোধক টিপস

  • ফল, শাকসবজি, মাছ এবং বাদাম খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। 

  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনুন।

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

 

হাঁটু ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার

 

৮. সাইনোসাইটিস

সাইনাসের প্রদাহের কারণে সাইনোসাইটিস হয়। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় সাইনোসাইটিস বেশি দেখা যায়, সাধারণভাবে সাইনোসাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ, এলার্জি, ঠাণ্ডা এবং ফ্লু। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় সাইনাসের ফলে আপনার মাথাব্যথা আরো খারাপ পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। 

লক্ষণসমূহ 

  • চোখের নিচে বা নাকের আশেপাশে নরম অনুভব করা

  • দাঁতে ব্যথা হওয়া

  • তীব্র মাথা ব্যথা

  • নাক বন্ধ থাকা

  • জ্বর

প্রতিরোধক টিপস

  • প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় পান করুন।

  • প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক স্যালাইন স্প্রে করে আপনার নাকের ভেতরে আর্দ্র পরিবেশ বজায় রাখুন।

  • এলার্জির মাত্রা কম রাখার চেষ্টা করুন।

  • ঠান্ডার সময় যথাসম্ভব গরম জায়গায় অবস্থান করুন।

  • বিমানে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।

 

৯. ঠাণ্ডাজনিত হাঁপানি

আমেরিকান ফুসফুস অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট অনুসারে জানা যায়, ঠান্ডা বাতাস, এলার্জি, ও হাঁপানি আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। মূলত ঠাণ্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া শ্বাসনালী শুকিয়ে হাঁপানি আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। 

লক্ষণসমূহ 

  • ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পাওয়া

  • বুকে ব্যথা 

  • ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া

  • ঘন ঘন কাশি

  • নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

  • কথা বলতে ও ঘুমাতে অসুবিধা

প্রতিরোধক টিপস

  • অ্যাজমা সমস্যার কারণ হতে পারে এমন উৎসেচক থেকে দূরে থাকুন। 

  • ধূমপান ত্যাগ করুন এবং ধূমপানমুক্ত পরিবেশে থাকুন।

  • আপনার শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে প্রয়োজনে দ্রুত ইনহেলার ব্যবহার করুন।

 

১০. ভিটামিন ডি এর অভাব

শীতকালে সূর্যালোকের উপস্থিতি কম থাকে, সুতারাং তখন আপনার ভিটামিন ডি-এর অভাবজনিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। 

লক্ষণসমূহ 

  • প্রায়ই বিভিন্ন সংক্রমণ রোগে অসুস্থ হওয়া 

  • অল্পতেই ক্লান্তি অনুভব করা

  • হাড় ও পিঠে ব্যথা

  • অতিরিক্ত চুল পড়া

  • বিষণ্ণতা বোধ হওয়া

  • ক্ষত শুকাতে অনেক সময় নেওয়া 

প্রতিরোধক টিপস

  • অধিক সময় সূর্যের আলোতে কাটানোর চেষ্টা করুন। 

  • প্রচুর ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার (মাশরুম, চর্বিযুক্ত মাছ, সামুদ্রিক খাবার ইত্যাদি) গ্রহণ করুন।

  • ভিটামিন ডি ট্যাবলেট গ্রহণ করুন

 

ভিটামিন ডি-এর অভাবে যে ১২ টি লক্ষণ দেখা দিতে পারে!

 

১১. সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (এসএডি) হল একটি মুড ডিসঅর্ডার। যা শরৎ এবং শীত জুড়ে বাকিদের মতো আপনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। এসএডি একটি গুরুতর ব্যাধি যা পরবর্তীতে পুরাপুরি ডিপ্রেশনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শীতের মৌসুমে হরমোনের পরিবর্তনের ফলে ঘটে থাকে।

লক্ষণসমূহ 

  • বিষন্ন এবং অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি অনুভব করা

  • দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ঘটা

  • কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা

  • একাকী সময় কাটানোর প্রবনতা 

  • অধিক ঘুমানো 

প্রতিরোধক টিপস

  • নিজের যত্ন নিতে হবে।

  • প্রতিনিয়ত শরীর চর্চা করতে হবে।

  • খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করতে হবে।

 

১২. হিটস্ট্রোক

হিটস্ট্রোক সূর্যের তাপে দীর্ঘ সময় থাকার, ফলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করে। তখন শরীরে ঘাম উৎপাদন বন্ধ হয়ে হিটস্ট্রোক হয়।

লক্ষণসমূহ 

  • শরীরে প্রচুর ঘাম হওয়া

  • দুর্বলতা

  • মাথাব্যথা

  • বমি বমি ভাব

  • মাথা ঘোরা

  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

প্রতিরোধক টিপস 

  • যত দ্রুত সম্ভব কটি ঠাণ্ডা জায়গায় যান।

  • তরল পানীয় এবং পানি পান করুন।

  • কিছু সময় বিশ্রাম নিন।

 

পরিশেষ

এই রোগসমূহ প্রতিরোধের সবথেকে কার্যকর এবং সহজ উপায় হলো, ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে ঋতুর আবহাওয়ার তারতম্যের ভিত্তিতে সর্বদা উপযুক্ত পোশাক নির্বাচন ও পরিধান করা। ঋতু পরিবর্তনকালীন সময়ে আপনার শরীর খারাপের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পূর্ব প্রস্তুতি আপনাকে সুস্থ রাখাবে। এ সময় খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত মৌসুমি ফল ও বিভিন্ন রঙের শাকসবজি রাখতে হবে। সর্বোপরি, সচেতনতাই হতে পারে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মূল মন্ত্র। 


 

আরও পড়ুনঃ

 

Default user image

মেহেবুবা হাসান, লেখক, আস্থা লাইফ

সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় পৃথিবীর অপার সৌন্দর্য ও জ্ঞান সমুদ্রের মাঝে জন্ম নেওয়া আমি এক সামান্য মানুষ, মেহেবুবা হাসান। উদ্ভিদ তত্ত্বের বই পুস্তকের বাইরে সাহিত্যকে ভালোবেসে কলম হাতে নেওয়া। আমার বিশ্বাস প্রতিটি মানুষের নিজস্ব ভাষা থাকে, আমার ভাষা কলম। সমাজকে রাতারাতি পরিবর্তন বা পরিমার্জনের আশা ব্যতিরেকে নিজস্ব পরিতৃপ্তি এবং মানুষের সামান্যতম উপকারে আসা আমার একান্ত প্রচেষ্টা।

Related Articles