গর্ভকালীন ৫ টি সমস্যা ও কার্যকরী সমাধান।
গর্ভাবস্থার বেশিরভাগ অসুবিধাগুলি স্বাভাবিক তবে মাঝে মধ্যে এগুলি আরও মারাত্মক কিছু হওয়ার ক্ষেত্রে আপনার জন্য সতর্কতা হতে পারে। গর্ভকালীন সময়ে আপনার কি সমস্যা হতে পারে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি বুঝতে পারেন যখন আপনার শরীরের কোন কিছু ঠিকমত না হবে।
গর্ভাবস্থা বা প্রেগন্যান্সি প্রতিটি নারীর জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। নিজের ভেতর নতুন আরেকটি জীবন বহন করা, এতগুলি মাস ধরে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করা কোন সহজ ব্যাপার নয়। এসময়ে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন হতে থাকে। ফলে সব গর্ভবতী মায়েরই সাধারণ কিছু সমস্যা হয়ে থাকে। বেশির ভাগ সমস্যাই আপনা আপনিই ঠিক হয়ে যায়, তবে কখনো কখনো ডাক্তারের পরামর্শ নেবার দরকার পড়ে। আসুন গর্ভাবস্থায় মায়েদের এইসব সমস্যার ব্যাপারে জেনে নেই।
১) বমি বমি ভাব
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বমি বমি ভাব, বার বার বমি হওয়া, গা গোলানো যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় মর্নিং সিকনেস। ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার বা প্রেগন্যান্সির প্রথম ৩ মাস শরীরে হরমোনের ওঠানামার কারণে বমি বমি ভাব হতে পারে। কম বেশি সব মায়েরই এই সমস্যা হয়ে থাকে।
সাধারণত সকালের দিকে হয়ে থাকে, তবে দিনের যেকোন সময়ে হতে পারে। অধিকাংশ মায়ের ১৪ সপ্তাহ হবার পর এই সমস্যা আস্তে আস্তে কমে যায়, তবে কখনো কখনো টুইন প্রেগন্যান্সি হলে সম্পূর্ণ গর্ভকালীন সময়েই বমি বমি ভাব, গা গোলানোর মত সমস্যা হতে পারে।
প্রতিকার
-
ঘুমোতে যাবার আগে হাতের কাছে হালকা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার রাখতে হবে। যেন ঘুম ভেঙে গেলে কিংবা ঘুম থেকে উঠে একটু কিছু খেয়ে নেয়া যায়।
-
ঘুম ভাঙার পর বিছানায় কিছুক্ষণ বসে থেকে নিজেকে ধাতস্থ করে নিতে হবে। তারপর বিছানা থেকে নামতে হবে।
-
তাড়াহুড়া না করে আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে উঠতে হবে।
-
একবারে বেশি খাবার খাওয়ার পরিবর্তে ঘন্টায় ঘন্টায় কিংবা দুই ঘন্টা পর পর হালকা কিছু খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় পাকস্থলী যেন কখনোই একদম খালি না থাকে।
-
কর্মজীবী মায়েরা বাইরে যাবার আগে সাথে করে খাবার নিতে ভুলবেন না যেন!
-
খাবারে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, লো ফ্যাট এবং অধিক পরিমাণে খনিজ লবণের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
-
খাদ্যতালিকায় সহজপাচ্য খাবার যেমন ভাত, কলা, টোস্ট, আপেল রাখতে হবে।
-
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে যেন বার বার বমি হলেও শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা না হয়।
-
গর্ভবতী মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে।
-
যেকোন ধরনের এন্টি এমেটিক (বমি প্রতিরোধি) খাবার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।
২) ব্রেস্ট টেন্ডারনেস
নবজাতকের জন্য মায়ের দুধই প্রথম ও একমাত্র খাদ্য। ব্রেস্ট টেন্ডারনেস বাংলায় যাকে বলে স্তন এবং তার আশপাশের এলাকায় ব্যথা যা গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে যেমন স্তনে হালকা ব্যথা, স্তন প্রদাহ দেখা যায়, এই সময়েও তেমনি স্তনে হালকা হালকা ব্যথা, স্তনে অতিরিক্ত ভার অনুভূত হয়। গর্ভাবস্থার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম সপ্তাহের মধ্যে ব্রেস্টের পরিবর্তন গুলো বোঝা যায়। পুরো প্রেগন্যান্সি জুড়েই ব্রেস্টের আকার বড় হতে পারে, তবে চার মাসের পর ব্যথা সাধারণত থাকে না।
প্রতিকার
-
সম্পূর্ণ প্রতিকার করা সম্ভব নয়, তবে ব্যথা সহনীয় করার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেয়া যায়। এজন্য গর্ভবতী মায়েদের ব্র্যাশিয়ার বা ব্রা পরা উচিত যেন স্তনের ভার কম অনুভূত হয়।
-
ঘুমানোর সময় ব্রেস্টকে সাপোর্ট দেয় এমন একটি নরম ব্র্যাশিয়ার ব্যবহার করতে হবে।
-
সব সময় ঢিলাঢালা আরামদায়ক সুতির জামা ব্যবহার করতে হবে।
-
ব্যথা বেশি হলে হালকা গরম ভাপ নেয়া যেতে পারে।
-
এসব করেও যদি ব্যথা না কমে, সেক্ষেত্রে হালকা পেইন কিলার খাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় কোন ব্যথা নিরোধক ওষুধই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন একটা মৌসুমি ফল, এক গ্লাস দুধ খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।
৩) ক্লান্তি ও অবসাদ
প্রেগন্যান্সিতে প্রতিনিয়ত হরমোন লেভেলের ওঠানামার জন্য শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন হতে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি ও অবসাদ আসাটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। ক্লান্তি ও অবসাদ কমানোর জন্য কিছু কাজ করতে পারেন।
প্রতিকার
-
আমাদের দেশে মায়েরা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ পান না। যখনি হাতে সময় থাকবে, একটু রেস্ট নিয়ে নেয়া উচিত। পর্যাপ্ত ঘুম খুবই প্রয়োজনীয় একটা বিষয়।
-
অতিরিক্ত রাত জাগা উচিত নয়। সব কাজকর্ম মিটিয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে।
-
এক্ষেত্রে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যত্নবান হওয়া উচিত। সবাই কাজ ভাগ করে নিয়ে গর্ভবতী মাকে বিশ্রামের সময় দিতে হবে।
-
প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।
-
গর্ভস্থ সন্তান এবং গর্ভবতী মা উভয়ের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। ভাজাপোড়া, জাংক ফুড একেবারেই খাওয়া যাবে না। প্রচুর প্রোটিন ও লৌহ সমৃদ্ধ খাবার প্রতিবেলায় খেতে হবে।
৪) ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পানি পান করার দরুন বার বার প্রস্রাব হয়। বিশেষ করে প্রথম ও শেষদিকে মায়েরা অতিরিক্ত প্রস্রাবের অভিযোগ করে থাকেন। প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা গর্ভাশয় ক্রমেই মূত্রথলির উপর চাপ দিতে থাকে, এর ফলে বার বার প্রস্রাবের বেগ হতে পারে।
প্রতিকার
-
প্রচুর পানি খেতে হবে। কোনভাবেই পানির পরিমাণ কমানো যাবে না। অনেকে প্রস্রাব বেশি হচ্ছে ভেবে পানি খাওয়া কমিয়ে দেন। এটা ঠিক নয়।
-
প্রতিবার প্রস্রাব করার সময় মূত্রথলি যেন পুরোপুরি খালি হয়।
-
রাতে যেন বার বার ঘুম ভেঙে ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য রাতে ঘুমাতে যাবার আগে বেশি পানি খাওয়া যাবে না।
-
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় মায়েরা প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেন না, এতে বিব্রত হবার বা অস্বস্তি বোধ করার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।
৫) বুকজ্বালা, বদহজম, ক্ষুধামান্দ্য
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে বদহজম ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। জ্বালা পোড়া ভাব, ক্ষুধা না হওয়া, খেতে ইচ্ছা না করা এইসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় পাকস্থলীর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, ফলে খাবার পাকস্থলী থেকে ইসোফ্যাগাস বা অন্ননালীতে চলে আসে। এ থেকে মুখে টক ভাব, বুক জ্বালাপোড়া, চোয়া ঢেকুরের মত সমস্যা হতে পারে।
প্রতিকার
-
বার বার অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে।
-
প্রচুর তরল জাতীয় খাবার, প্রচুর পানি, ফলের রস পান করুন।
-
ঘুমানোর একদম আগে আগে কিছু খাবেন না। খেয়েই শুয়ে পড়া যাবে না। খাবার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা ভালো।
-
একদম চিত হয়ে না শুয়ে হেলান দিয়ে বা মাথা একটু উচুতে রেখে কাত হয়ে শোয়া অভ্যাস করতে হবে।
-
ভাজাপোড়া ঝাল মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
-
ডাক্তারের পরামর্শ মতন কোন এন্টাসিড ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬) অতিরিক্ত ঘাম
হরমোন ওঠানামা, অতিরিক্ত ওজন, শরীরে বেড়ে যাওয়া রক্তপ্রবাহ গর্ভাবস্থায় দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এজন্য এসময় মায়েদের খুব বেশি ঘামতে দেখা যায় বিশেষ করে রাতের বেলা খুব ঘাম হয়।
প্রতিকার
-
হালকা নরম সুতি পোষাক পরে ঘুমাতে যান। অতিরিক্ত টাইট, বডি ফিটিং পোষাক না পরাই ভালো।
-
ক্যাফেইন আছে এমন পানীয় বর্জন করা উচিত। যেমন, চা বা কফি।
-
প্রচুর পানি খেতে হবে যেন ঘামের ফলে ডিহাইড্রেশন না হয়।
-
যেখানেই যান নিজের সাথে ছোট ফ্যান বহন করতে পারেন।
-
যারা ব্যায়াম করেন, বাইরের রোদ গরম ধূলা বালি এড়িয়ে ঘরের ভিতরেই হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে।
৭) মাথাব্যথা
হরমোন, স্ট্রেস, অবসাদ, রক্তে শর্করা কমে যাওয়া, ক্যাফেইনের অভাব সব মিলিয়ে এ সময় মাথা ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
প্রতিকার
-
যখনি সময় পাবেন, বিশ্রাম নিতে হবে। চাইলে অল্প ঘুমিয়েও নেয়া যায়।
-
রক্তে শর্করার পরিমাণ যেন অতিরিক্ত কমে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
-
অল্প অল্প করে ট্যাপারিং ডোজে ক্যাফেইনের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে।
-
অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে একজন থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা যেতে পারে।
-
তবে মাথাব্যথা যদি অতিরিক্ত হয়, কোনক্রমেই যদি না কমে অথবা গর্ভবতী মা যদি অজ্ঞান হয়ে যান তখন যত দ্রুত সম্ভব তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
৮) কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভাবস্থায় খাবার পরিপাক ও শোষণে অতিরিক্ত সময় লাগে। পাশাপাশি বাড়তে থাকা গর্ভাশয় আন্ত্রিক তন্ত্র বা ইন্টেস্টাইনের উপর চাপ দেয়। ধীরগতির পরিপাকক্রিয়া এবং ইন্টেস্টাইনের উপর অতিরিক্ত চাপের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপ দেয়ার মত সমস্যা হতে পারে।
প্রতিকার
-
আঁশযুক্ত খাবার যেমন নানা ধরনের ফল ও সবজি বেশি করে খেতে হবে।
-
তরল খাবার যেমন স্যুপ, স্টু, নানারকম জুস বেশি বেশি খেতে হবে।
-
ব্যায়াম করলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। তাই নিয়মিত ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে হবে।
-
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ল্যাক্সেটিভ ঔষধ ওটিসি বা ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ হিসেবে পাওয়া যায়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এগুলো ব্যবহার করা খুবই বিপদজনক। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না।
৯) অর্শ বা রক্তক্ষরণ
গর্ভকালীন সময়ের একদম শেষদিকে অনেকের পায়ুপথ থেকে রক্তপাত হতে পারে।
প্রতিকার
-
কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
-
মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না।
-
বহুক্ষণ একইভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। মাঝেমাঝে পজিশন পরিবর্তন করতে হবে।
-
খাদ্যতালিকায় সবজি ও ফলের আধিক্য থাকতে হবে।
১০) পিঠে ব্যথা
এসময় অনেক মায়েরই লো ব্যাক পেইন হতে পারে।
প্রতিকার
-
বার বার নিজের বসার বা দাঁড়ানোর ভঙ্গি বদলান।
-
কাজ করার ফাঁকে উঠে হাঁটাচলা করতে হবে।
-
কোন ভারী কাজ করা যাবে না, ভারী ওজন বহন করা যাবে না।
-
ডাক্তারের পরামর্শ মত কোমরে বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন?
গর্ভাবস্থায় উপরোক্ত সমস্যাগুলি সবারই কমবেশি হয়ে থাকে। বেশির ভাগ সময়ই ডাক্তারের কাছে যাবার প্রয়োজন পড়ে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতেই হয়। যেমন -
-
যদি খাবার খাওয়া মাত্র বমি হতে থাকে
-
কোন কনট্রাকশন বা ক্র্যাম্পিং হলে
-
গর্ভাবস্থায় শিশুর নড়াচড়ায় কোন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে
-
রক্তপাত হলে
-
প্রচণ্ড পেট ব্যথা হলে
-
প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব হলে
-
প্রচন্ড জ্বর, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট হলে
-
চোখে ঝাপসা দেখলে
-
হাত, পা ফুলে গেলে
পরিশেষে, গর্ভাবস্থায় অনাগত সন্তানের জন্য একই সাথে চিন্তা ও খুশি দুটোই কাজ করে। স্ট্রেস, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হরমোন, শারীরিক পরিবর্তন সব মিলিয়ে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। তবে আপনি একা নন, সব মায়েরই কম হোক বেশি হোক এই সমস্যাগুলি হয়। এগুলোকে স্বাভাবিক ধরে নিয়ে সতর্কতা মেনে নিয়মিত কাজকর্ম করতে হবে, ঘড়ি ধরে বিশ্রাম নিতে হবে আবার প্রয়োজন পড়লে ডাক্তারের সাথে আলোচনাও করতে হবে। আর এভাবেই নিরাপদ গর্ভাবস্থা এবং সুস্থ সন্তান নিশ্চিত করা সম্ভব।