কিভাবে ঔষধের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবেন?
ঔষধের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক তথ্য কোথায় পাব? ঔষধের সঠিক ব্যবহারে ডাক্তার এবং ফার্মাসিস্টের ভূমিকা কী? নিরাপদে ঔষধ গ্রহণ করবেন কিভাবে? নিরাপদে ঔষধ সংরক্ষণ করবেন কিভাবে?
জীবনে কোনো ঔষধ খায়নি এমন লোক বোধ হয় বাচ্চাদের রূপকথাতেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বড় ধরণের কোনো অসুখবিসুখের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম; সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশি, মাথাব্যথা, এসিডিটি এসব মামুলি ব্যাপারেও আমরা হরহামেশাই ঔষধ খেয়ে থাকি। ঔষধ আমাদের দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে সহায়তা করে। তবে ঔষধ যখন ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়, তখন তা মারাত্মক দুর্ঘটনা বা এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এর মধ্যে অনেক সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়। ঔষধ ঠিকমত ব্যবহার হচ্ছে কিনা তার উপর নজর রাখা জরুরী এবং আপনাকে সতর্ক হওয়া দরকার। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলির মতো সমস্যা এড়াতে অবশ্যই ঔষধের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ঔষধ কী?
রোগ নির্ণয়ের জন্য কিংবা রোগ উপশমের জন্য আমরা যে রাসায়নিক কিংবা প্রাকৃতিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করি তাই হল ড্রাগ বা মেডিসিন বা ঔষধ। যদিও আমাদের দেশের প্রচলিত ভাষায় ড্রাগ বলতে বিভিন্ন নিষিদ্ধ বস্তু বুঝায়, প্রকৃতপক্ষে ড্রাগ মেডিসিনেরই প্রতিশব্দ। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রায় সব ধরণের রোগই এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। শুধু চাই তার সঠিক প্রয়োগ। অসুস্থ হলে সুস্থ হবার জন্য যেমন ঔষধ দরকার তেমনি ঠিকমত ব্যবহার করতে না পারলে উল্টো ফলও হতে পারে। তাই সঠিকভাবে ঔষধ নির্বাচন করা এবং তার প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঔষধ সম্পর্ক সঠিক তথ্য কোথায় পাব?
একজন রোগী হিসেবে ঔষধ সম্পর্কে যতখুশি তথ্য জানার অধিকার আপনার রয়েছে। আবার আপনাকে আপনার মত বুঝিয়ে দেওয়া আপনার স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের দায়িত্ব। ঔষধ সেবন শুরু করার আগে আপনার ঔষধের সুবিধাগুলি এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলি নিশ্চিত হওয়া উচিত।
আপনার যদি কোনও নির্দিষ্ট প্রশ্ন বা উদ্বেগ থাকে কিংবা একটি নির্দিষ্ট ঔষুধ সম্পর্কে আরও জানতে চান তবে আপনি-
-
সর্বপ্রথম আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন
-
রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টের সাথে কথা বলুন
-
হাসপাতালে অবস্থানকালে আপনার নার্স বা অন্যান্য দক্ষ স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে কথা বলুন
-
ঔষধবাজারজাত করে এমন ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার সাথে যোগাযোগ করুন (সংস্থার ঠিকানা এবং ফোন নম্বর প্যাকেজিংয়ে না থাকলে আপনার ফার্মাসিস্ট আপনাকে সহায়তা করতে পারে)
-
ঔষধসম্পর্কে ঔষধের প্যাকেটের ভিতর “গ্রাহক ঔষধের তথ্য” (লিফলেট) দেখুন
"আপনার স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে ভয় পাবেন না। ঔষধ সম্পর্কে তথ্য জানা আপনার অধিকার।"
ডাক্তারকে প্রশ্ন করুন - বিভ্রান্তি এড়ান
আপনি যখন ডাক্তারের কাছ যাবেন এবং সে আপনাকে ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিবে তখন আপনাকে নিজে থেকে প্রশ্ন করে ডাক্তারের কাছ থেকে ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
-
ঔষধের নাম কী এবং আমি কেন এটি খাচ্ছি?
-
এই ঔষধটি কোন রোগের চিকিত্সা করে?
-
দিনে কতবার নেওয়া উচিত? কোন সময়? যদি দিনে ৩ বার গ্রহণ করতে বলা হয় , তার অর্থ কি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩ বার নাকি দিনের বেলার মধ্যে ৩ বার গ্রহণ করা উচিত?
-
আমার কতটুকু বা কয়টা ঔষধখাওয়া উচিত?
-
খাবার দিয়ে নাকি খাবার ছাড়া ঔষধখাওয়া উচিত? এই ঔষধটি গ্রহণ করার সময় আমার কী কোন নির্দিষ্ট কিছু খাওয়া বা পান করা উচিত নয়?
-
এই ঔষধটি কাজ শুরু করতে কতক্ষণ সময় লাগবে?
-
যদি আমি অন্যান্য ঔষধসেবন করি তবে এই ঔষধটি কি সমস্যার সৃষ্টি করবে?
-
এই ঔষধটি নেওয়ার সময় গাড়ি চালানো কি আমার পক্ষে নিরাপদ?
-
"প্রয়োজন হলে" এর অর্থ কী?
-
আমার কখন ঔষধখাওয়া বন্ধ করা উচিত?
-
আমি যদি আমার ঔষধখেতে ভুলে যাই তবে আমার কী করা উচিত?
-
কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে? আমার যদি সমস্যা হয় তবে আমি কী করব?
-
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে বাচ্চার উপর ঔষধের কোনো প্রভাব পড়বে কিনা?
"প্রতিবার আপনি যখন আপনার চিকিত্সকের সাথে দেখা করবেন তখন তাকে নতুন যে ঔষধ খাচ্ছেন সে সম্পর্কে বলুন এবং আপনার সমস্ত ঔষধ এখনও আপনার দরকার আছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করতে ভুলবেন না।"
ফার্মাসিস্ট আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে?
ফার্মাসিস্টের কাছে সাহায্য নেওয়ার আগে আমরা জেনে নেই ফার্মাসিস্ট কারা। আমাদের প্রায় সকলের ধারণা হচ্ছে ঔষধের দোকানদারই হচ্ছে ফার্মাসিস্ট, যা একদম ভুল এবং ভ্রান্ত ধারণা। ফার্মাসিস্ট হছে সে যার ঔষধ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী আছে এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত। সুতরাং ফার্মাসিস্ট হচ্ছে একজন দক্ষ সাস্থ্য পেশাদার এবং ঔষধের দোকানদার শুধুই দোকানদার। বর্তমানে বিভিন্ন মডেল ফার্মাসিতে রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট কাজ করছে। আ্পনারা সেখান থেকে দক্ষ ফার্মাসিস্টের সাহায্য গ্রহণ করতে পারি।
একজন ফার্মাসিস্ট প্রেসক্রিপশন এবং ঔষধ সম্পর্কে আপনার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। আপনার সমস্ত প্রেসক্রিপশন একই ফার্মাসিতে দেখানোর চেষ্টা করুন যেখানে ফার্মাসিস্ট রয়েছে যাতে আপনার ঔষধের ইতিহাসগুলি এক জায়গায় থাকে। এতে আপনি কি ঔষধ খাচ্ছেন বা কিসে সমস্যা হচ্ছে তা সম্পর্কে ফার্মাসিস্ট আপনাকে তথ্য দিতে পারবে।
আপনি ফার্মাসিস্টের কাছ থেকে জানতে পারেন:
-
যদি আপনার বড়ি (ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল) গিলতে সমস্যা হয় তবে ফার্মাসিস্টকে বলুন। সে আপনাকে তরল ঔষধটি দিবে যদি পাওয়া যায়।
-
নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি ঔষধের নাম এবং ঔষধ গ্রহণের দিকনির্দেশগুলি বুঝতে পারছেন।
-
ঔষধ সেবনের নিয়মগুলি লিখে দিতে বলুন।
-
কোন ঔষধটি কোথায় সংরক্ষণ করবেন সে সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশাবলী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। উদাহরণস্বরূপ, এটি ফ্রিজে রাখা উচিত বা শুকনো জায়গায় রাখা উচিত?
-
ফার্মেসী ছাড়ার আগে আপনার ঔষধগুলি পরীক্ষা করুন। যদি চিকিত্সকের দেওয়া নির্দেশাবলী অনুসারে সব ঠিক থাকে তবেই নিবেন। যদি তা না হয় তবে তা নেবেন না, এবং ফার্মাসিস্টের সাথে কথা বলুন।
-
ঔষধের কোনও উপাদানের সাথে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন এবং তা ডাক্তার ও ফার্মাসিস্টকে অবহিত করুন। এতে তারা আপনাকে এমন কোনও ঔষধ দিবে না যার মধ্যে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে।
আপনার ঔষধের একটি তালিকা তৈরি করুন
-
আপনি যে ঔষধগুলি ব্যবহার করেন সেগুলির একটি তালিকা তৈরি করুন। আপনি কতটা ব্যবহার করেন এবং কখন ব্যবহার করেন তা লিখে রাখুন।
-
আপনি যখনই কোনও ডাক্তারের কাছে যান তখন আপনার সাথে তালিকাটি নিয়ে যান।
-
আপনার ঔষধের সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোনও তথ্য পড়ুন এবং তালিকায় সংরক্ষণ করুন।
-
আপনার ঔষধটি কোন বাক্সে বা বোতলে রাখুন যাতে সহজেই সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়। ঔষধটি কবে শুরু করেছেন এবং কবে শেষ করবেন তাও লিখে রাখুন।
-
আপনার ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলের রঙ এবং আকারের দিকে খেয়াল রাখুন এবং তালিকায় সংরক্ষণ করুন। যদি পুনরায় কেনার সময় সেগুলি আলাদা দেখায়, আপনার ফার্মাসিস্টকে আপনার সঠিক ঔষধ আছে কিনা পরীক্ষা করতে বলুন।
নিরাপদে ঔষধ গ্রহণ করুন
আপনি যেন নিরাপদে আপনার ঔষধগুলি নিতে পারেন তার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছেঃ
-
নির্দেশাবলী অনুসরণ করুনঃ সমস্ত ঔষধের নির্দেশনাগুলি ভালো করে দেখে নেন। আপনার ঔষধগুলি সঠিক উপায়ে নেওয়া নিশ্চিত করুন।
-
সঠিক পরিমাণ ব্যবহার করুনঃ অনেকে ভাবতে পারেন যে একটার জায়গায় দুইটা ট্যাবলেট খেলে হয়ত দ্রুত কাজ দিবে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এমনকি মারাত্মকও হতে পারে। আবার অর্থ সাশ্রয়ের জন্য কোনও প্রেসক্রিপশনের অর্ধেক ডোজ গ্রহণ করবেন না। আপনাকে যতটুকু খেতে বলা হয়েছে ঠিক ঐ পরিমাণ খাবেন। এর বেশি বা কম নয়।
-
সময়মতো ঔষধ খানঃ কিছু লোক তাদের ঔষধ গ্রহণের জন্য খাবার বা শোবার সময়কে ব্যবহার করে। অন্যান্য ব্যক্তিরা চার্ট বা তালিকা, ক্যালেন্ডার বা সাপ্তাহিক ঔষধ বাক্স ব্যবহার করেন। আপনি ঔষধ গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সময় বা রিমাইন্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
-
আলোর মধ্যে ঔষধ গ্রহণ করুনঃ অন্ধকারে ঔষধ খাবেন না; অন্যথায়, আপনি একটি ভুল করতে পারেন।
-
সমস্যাগুলি প্রতিবেদন করুনঃ আপনার ঔষধে যদি কোনও সমস্যা হয় বা আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন যে এটি ভাল হওয়ার চেয়ে আরও বেশি ক্ষতি করছে তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারকে কল করুন।
-
আপনার ডাক্তারকে অ্যালকোহল, তামাক এবং ড্রাগ ব্যবহার সম্পর্কে বলুনঃ অ্যালকোহল, তামাক এবং অন্যান্য ড্রাগগুলি আপনার ঔষধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি কতটা ব্যবহার করেন সে সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে সৎ হওয়া উচিৎ।
-
থামার আগে নিশ্চিত হনঃ ঔষধটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা আপনার চিকিত্সক না বলা অবধি ঔষধ বন্ধ করবেন না। মনে রাখবেন যে কিছু ঔষধ কেবল "প্রয়োজন অনুসারে বা প্রয়োজোন হলে" গ্রহণ করার কথা।
-
ঔষধ ভাগাভাগি করবেন নাঃ অন্য ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত ঔষধ সেবন করবেন না বা অন্য কাউকে আপনারটা দেবেন না।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া - কি করবেন?
সব ঔষধেরই কম বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। কখনো কখনো সেসব এমনিতে সেরে যায়। আবার কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় প্রেসক্রিপশন লেখার সময়ই ডাক্তার ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। যদি নাও করেন, আপনার উচিত হবে নিজ থেকে জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া। আগে থেকে জানা না থাকলেও ছোটোখাটো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে আতঙ্কিত হবেন না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যান এবং তাকে এ ব্যাপারে অবহিত করুন। এর আগে কোনো ঔষধে আপনার কোনো ধরণের কোনো সমস্যা হলে সেটাও উল্লেখ করতে ভুলে যাবেন না কিন্তু !
ঔষধ কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে লেখা উৎপাদন তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ দেখে নিন। অনেক সময় মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ থেকেও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। অনেক দোকানে মেয়াদ নেই এমন ঔষধও রেখে দেয়া হয় বিক্রি করার জন্য। তাই কোন দোকান থেকে আপনি ঔষধ কিনবেন সেটাও ভেবেচিন্তে ঠিক করুন।
নিরাপদে ঔষধ সংরক্ষণ করুন
যে ঔষধগুলি সঠিকভাবে সঞ্চিত থাকে সেগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং আরও ভাল কাজ করে।
-
প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশনা দেখে ঔষধ ঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু কিছু ঔষধ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয়।
-
যেসব ঔষধের বিশেষ সংরক্ষণ নির্দেশাবলী নেই সগুলো শীতল, শুকনো জায়গায় ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন। রান্নাঘর বা বাথরুমের মতো স্যাঁতসেঁতে ও উষ্ণ জায়গাগুলিতে ঔষধগুলি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
-
সূর্যের আলোর সংস্পর্শ থেকে ঔষধ দূরে রাখুন
-
ফার্মাসিস্টকে ঔষধের বিশেষ সংরক্ষণ নির্দেশাবলী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন।
-
সব ধরনের ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
-
পোষা প্রাণী থেকে ঔষধ দূরে রাখুন।
-
মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে (পুরানো) ঔষধ এ আর ব্যবহার করবেন না।
কখন ঔষধ খাওয়া বন্ধ করবেন?
ঔষধ খাওয়া বন্ধ করার জন্য ডাক্তারের নির্দেশনা মানুন। এন্টিবায়োটিক ঔষধের ক্ষেত্রে অবশ্যই কোর্স কমপ্লিট করুন। কিছু কিছু ঔষধ আপনি চাইলেই হুট করে বন্ধ করতে পারবেন না। আপনাকে আস্তে আস্তে ডোজ কমাতে হবে। একে বলে 'টেপারিং ডোজ'। অনেক সময় ঔষধ বন্ধ করলে নানা রকম উপসর্গ দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
পুরানো ঔষধ কি করবেন?
-
পুরানো ঔষধ ঘরে রেখে মেয়াদোত্তীর্ণ করবেন না। ঔষধের দোকানে ফেরত দিয়ে দিন।
-
অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
-
আপনার নির্ধারিত অব্যবহৃত ঔষধগুলি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ফার্মাসিতে ফেরত দিয়ে দিবেন।
-
পুরানো ঔষধ ফেলে দিতে চাইলে টয়লেটে ভালোমতো পানি ঢেলে ফেলে দিন।
-
যেনতেনভাবে আবর্জনায় ঔষধ নিক্ষেপ করবেন না। সিল করা প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখে তারপর ফেলে দিন।
রোগশোক থেকে দূরে থাকার জন্য মানুষের নিরন্তর প্রচেষ্টা সেই আদ্যিকাল থেকেই। প্রাণঘাতী নানা রোগকে আমরা জয় করেছি, আমাদের গড় আয়ু এখন উল্লেখযোগ্য রকমের বেশি। সবই সম্ভব হয়েছে নতুন নতুন ঔষধ আবিষ্কার ও তার সঠিক প্রয়োগের ফলে। তাই রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধ অবশ্যই খাবেন। কিন্তু সঠিক নিয়মে খাবেন। ঔষধের সঠিক ব্যবহার শুধু রোগ দূর করে তাই নয়, সাথে সাথে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও উন্নত করে এবং ভবিষ্যৎ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও কমে যায়। তাই সুস্থ আগামীর জন্য ঔষধের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।