৮-৮-৮ নিয়ম: সফল হওয়ার দুর্দান্ত কৌশল
আধুনিক এই যান্ত্রিক যুগে সুখী, সফল এবং স্বাস্থ্যকর এই সব মিলিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন ৮-৮-৮ নিয়মকে। এই দুর্দান্ত কৌশলটি অনুসরণ করতে পারলে আপনি সফল হবেন তা নিশ্চিত।

আধুনিক বিশ্বে আমরা এমন হয়ে গেছি যে কাজকে কেন্দ্র করেই আমাদের জীবনটাকে পরিচালিত করি। আমরা এটির সাথে এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছি যে ‘কাজ-ঘুম-কাজ’ এর বাইরে আমরা আর চিন্তাই করতে পারি না। সপ্তাহে ৪০ কর্মঘন্টা যেন কল্পনাতীত, কারণ আমাদের জন্য এখন ৬০,৮০ এমনকি ১০০ কর্মঘন্টাও যেন স্বাভাবিক ব্যাপার। সপ্তাহের ছুটির দিনটাকেও যেন আমরা কাজের বাইরে রাখতে পারি না।
“আমরা ভুলে গেছি কিভাবে বাঁচতে হয়!”
অতিরিক্ত কাজে স্বাস্থ্যঝুঁকি
আপনি যদি মনে করেন যে দিনে ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করা আপনার স্বাস্থ্যের উপর কোণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না তাহলে আপনি মিথ্যা বলছেন। কারণ অতিরিক্ত কাজের জন্য আপনি নিম্নোক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন-
-
হার্ট সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি ৬০% বেশি
-
দীর্ঘস্থায়ী ঘুমের স্বাস্থ্যঝুঁকি
-
মানসিক চাপ বৃদ্ধি
-
স্থূলতা বা অত্যাধিক ওজন
-
ঝুঁকিপূর্ণ অ্যালকোহল ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ধূমপানে আসক্ত হওয়া
-
টাইপ ২ ডায়াবেটিস
অতিরিক্ত কাজ করার ফলে ঘটে যাওয়া অনেক নেতিবাচক দিকের মধ্যে এগুলি কয়েকটি। কিন্তু, আপনি হয়ত এর মারাত্নক বিপদ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
তাহলে উপায়? ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করুন এই ‘আট-আট-আট’–এর নিয়মে।
৮-৮-৮ নিয়ম কী?
৮-৮-৮ নিয়ম হল একটি সময় পরিচালনা কৌশল, যা আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে এতে আট ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করার কথা বলা হয়েছে, আর ৮ ঘন্টা ঘুমের জন্য এবং বাকি ৮ ঘন্টা বিনোদনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। মুলত এতে একটি স্বাস্থ্যকর এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য, ২৪ ঘন্টাকে তিনটি ভাগে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। মোটকথা এই নিয়ম আপনাকে-
-
সফল হতে
-
সুখী হতে
-
স্বাস্থ্যকর থাকতে সাহায্য করে।
৮-৮-৮ নিয়মের ইতিহাস
সাধারণত ১৮-শতকের শেষের দিকে, কোম্পানিগুলো তাদের কারখানার উৎপাদন সর্বাধিক করতে ২৪/৭ ঘণ্টা কাজ চালাত। মূলত এই সময় শ্রমিকদের দৈনিক ১০-১৬ ঘন্টা কাজ করতে হতো। সেসময় এই অতিরিক্ত কাজের ঝুঁকি কমাতে ‘রবার্ট ওয়েন’ নামে একজন একটি প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তার ভাষ্য মতে, শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘন্টার বেশি কাজ করবে না। মূলত তার স্লোগান ছিল ‘আট ঘণ্টা শ্রম, আট ঘণ্টা বিনোদন, আট ঘণ্টা বিশ্রাম।’
৮-৮-৮ নিয়মে ফোর্ড কোম্পানি যেভাবে সফল হয়েছিল
১৯১৪ সালে ফোর্ড মোটর কোম্পানি শুধুমাত্র আদর্শ কাজের দিনকে আট ঘন্টায় কমিয়ে দেয়নি, বরং প্রক্রিয়াটিতে তাদের কর্মীদের বেতন দ্বিগুণ করেছিল। এতে ফোর্ডের লাভের পরিমাণ দুই বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর এটি অন্যান্য কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মীদের জন্য আট ঘন্টা কাজ করার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করেছিল। আসুন আজকের লেখায় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ২৪ ঘন্টাকে ‘আট-আট-আট’–এর নিয়মে ভাগ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
রোজকার জীবনে ৮-৮-৮ নিয়ম কীভাবে প্রয়োগ করবেন?
১. প্রতিদিন ৮ ঘন্টা কাজ করুন
নিয়মের প্রথম অংশটি আপনাকে দিনে ৮ ঘন্টা কাজ করতে বলে, এবং তার থেকে এক মিনিটও বেশি নয়। আপনি যদি আপনার সময় সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন তবে এটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন সম্ভব। এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা আপনাকে এটি অর্জন করতে সহায়তা করবে।
৮০/২০ নিয়ম অনুসরণ করুন
ওহ না, আরেকটি নিয়ম! আসলে এই নিয়মটি আপনাকে বলে যে ৮০% ফলাফল মাত্র আপনার ২০% কার্যকলাপ থেকে আসে, যা প্যারেটো নীতি হিসাবে পরিচিত। আপনি শুধু ঐসব কাজই ফোকাস করুন যা আপনাকে সর্বোচ্চ ফলাফল এনে দিবে। আর বাকীগুলা উপেক্ষা করুন। দেখবেন কাজের চাপ অনেক কমে গেছে।
আপনার দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করুন
এই ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার আগে আপনার দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করে তাদের শক্তিশালী করুন। সেক্ষেত্রে আপনার সময় বাঁচাতে পারে এমন বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিন। এছাড়াও আপনি যাতে সুস্থ-সাবলীল ভাবে কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারেন, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
অযথা সময় নষ্ট করবেন না
সাধারণত কাজ করার সময় আপনাকে বিভ্রান্ত করে বা সময় নষ্ট করে এমন সবকিছু দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কাজের সময় আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো থেকে দূরে থাকুন। কেননা কাজের সময় ফেসবুক প্রোফাইল ঘেটে দেখার ফলে আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। আর কাজে মনোযোগ বিঘ্নিত হলে আপনার উপর মানসিক চাপও পড়তে পারে।
আপনার কাজগুলিকে যতটা সম্ভব ভাগ করে দিন
আপনি আপনার কাজগুলো কীভাবে শেষ করবেন তা শিখতে চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, আপনার হাতে ২টি কাজ আছে। সেক্ষেত্রে এই দুটি কাজের যেই কাজটা আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আগে করুন। আর পরবর্তীতে অন্য কাজটি নিজে করতে কিংবা কাউকে দিয়ে করাতেও পারেন। এতে কাজের সময় আপনার উপর অযথা চাপ এবং টেনশন কাজ করবে না। আপনি কখনও এমন একজন হবেন না যে সব কাজ করে।
না বলতে শিখুন
সাধারণত সব কাজেই "হ্যাঁ" বলা সহজ, কিন্তু "না" বলা সত্যিই কঠিন। কিন্তু অনেকসময় আপনাকে প্রত্যাখ্যান করা শিখতে হবে। সেক্ষেত্রে সুস্থ-সাবলীল অবস্থায় আপনার হাতে ৮ ঘণ্টার পরিপূর্ণ কাজ থাকলে, সেটাতে ব্যস্ত থাকুন এবং অন্য কিছুকে না বলুন। এক্ষেত্রে ‘ওয়ারেন বাফেট’-এর একটি কথা মনে রাখুন যে, "সফল মানুষ এবং খুব সফল মানুষের মধ্যে পার্থক্য হল যে, খুব সফল মানুষ প্রায় সবকিছুকে 'না' বলে।"
কাজ শুরু করার আগেই পরিকল্পনা তৈরী করুন
আপনার কাজ শুরু করার আগে সেগুলোকে নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে প্রতিদিনের কাজ শুরুর আগেই সে সম্পর্কে একটি বাস্তবসম্মত এবং পরিষ্কার পরিকল্পনা তৈরী করুন। পরবর্তীতে কাজগুলোকে মনোযোগের সাথে সম্পূর্ণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনাকে ৫ দিনে ২০টি কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে সেগুলোকে দৈনিক ৪ ভাগে ভাগ করে তা সম্পূর্ণ করুন।
২. আপনার নিজের জন্য ৮ ঘন্টা
এই ৮ ঘন্টা শুধু আপনার এবং আপনার কাছের মানুষের জন্য। নিজের সাথে এবং পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এর সাথে সময় কাটালে মনের মধ্যে একধরণের প্রশান্তি বিরাজ করে। আসলে দিন শেষে তো এটাই আনন্দের যায়গা।
এই সময়টাতে আপনি আপনার শখগুলিও পূরণ করতে পারেন। আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু শখ আছে। উদাহরণসরূপ- কোথাও ঘুরতে যাওয়া, বই পড়া, মানুষকে সচেতন ও সাহায্য করা, অসহায়দের সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি।সেক্ষেত্রে দিনের একটি সময় এতে ব্যয় করুন। কেননা এতে আপনার উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমবে এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
৩. দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমান
সাধারণত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানুষের একদিনে প্রায় ৮ ঘণ্টার মত ঘুমের প্রয়োজন। কেননা নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুম না হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আপনার কাজের ক্ষেত্রে পূর্ণ শক্তি পুনরুদ্ধার এবং সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ঘুম কম হলে কি ক্ষতি হয়!
৮-৮-৮ নিয়ম পালনে আপনি জীবনে যে সাফল্যগুলি পেতে পারেন
আপনি ৮-৮-৮ নিয়মটি পালন করতে পারলে জীবনে বিভিন্ন রকম সুবিধা পেতে পারেন। সেগুলি হচ্ছে-
ফোকাস ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
এই ৮-৮-৮-৮ নিয়মটিতে আপনি হাতে থাকা কাজের উপর ফোকাস করতে এবং আরও উত্পাদনশীল হয়ে উঠতে পারেন। সাধারণত এই নিয়মটি আপনাকে আপনার দৈনন্দিন জীবনের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট ছন্দ স্থাপন করতে সহায়তা করে। আর যার ফলে আপনি অতিরিক্ত কাজের মধ্যে আটকা পড়েন না এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ভুলে যান না।
কর্মজীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে
এই ‘আট-আট-আট’–নিয়মের আরেকটি সুবিধা হল তা উন্নত কর্মজীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে। এতে আপনি আপনার পরিবারকে সময় দিতে কিংবা নিজের শখ পূরণ করতেও পারেন। মূলত এতে দীর্ঘ কর্মদিবসের কারণে আপনার ক্লান্তি প্রতিরোধ করে উদ্বেগ কমাতেও সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, সারাদিন উৎপাদনশীলতা বজায় রাখার জন্য ভাল ঘুম অপরিহার্য। তাইতো আপনার সময়সূচী পরিকল্পনা করার সময় আপনি ৮-৮-৮ নিয়ম অনুসরণ করুন। এতে আপনি আপনার পেশাগত এবং ব্যক্তিগত উভয় জীবনে ভারসাম্য খুঁজে পাবেন।
সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে
আপনার সৃজনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৮-৮-৮ নিয়মটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি আপনার অবসর সময়ে বই পড়তে কিংবা গান শুনতে পারেন। কেননা তা আপনার কল্পনাকে সক্রিয় করতে এবং ধারণাগুলোকে ক্রিয়াশীল করতে সহায়তা করতে পারে। আবার কাজের পড়ে অবসর নেওয়া হলে, তা আপনার মস্তিষ্ককে উদ্দীপনা থেকে প্রয়োজনীয় বিরতি দিতে পারে এবং এটি আরও সৃজনশীল সমাধান নিয়ে আসতে সাহায্য করে। এছাড়াও আপনার টিমের লোকেদের সাথে থাকা এবং তাদের সাথে ব্রেনস্টর্মিং সেশনগুলো করার ফলেও আপনার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি হতে পারে।
শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করে
সাধারণত এই ৮-৮-৮ নিয়মটি আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, দিনকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করার ফলে, আপনার মানসিক চাপ কমে যায় এবং শরীরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলোরও উন্নত হয়। তদুপরি, এই ধরণের ব্রেক-আপ রুটিন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকে উৎসাহিত করে। সামগ্রিকভাবে, এই সিস্টেমটি কঠোর পরিশ্রম এবং আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার মধ্যে একটি সুস্থ ভারসাম্য প্রদান করে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
এই ৮-৮-৮ নিয়মটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। কেননা এতে পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি চাপ, উদ্বেগ এবং বিষন্নতা কমাতে পারে। এই নিয়মটি মেনে চললে আপনার শরীর পূর্ণ বিশ্রাম নিতে পারে। এক্ষেত্রে দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমালে আপনার কর্মক্ষমতা এবং স্মৃতি ধারনের সক্ষমতা বেড়ে যাবে। উপরন্তু, নিয়মিত ঘুমানোর সময় লেগে থাকা শরীরের সার্কেডিয়ান ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা ভালো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও এই নিয়মের সাথে আপনার ঘুমের উন্নতি মানসিক স্বাস্থ্যে ভালো করতে এবং চাপ কমাতে পারে।
জীবনযাত্রার মান উন্নত করে
৮-৮-৮ নিয়মটি জীবনযাত্রার একটি উন্নত মানের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এতে আপনি আরাম করার এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য ৮ ঘণ্টা সময় পান। মূলত এতে আপনার মানসিক চাপের মাত্রাও কমে যায়। এছাড়াও এতে আপনি বাড়িতে ও কর্মক্ষেত্রের দায়িত্বগুলো আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেন। এছাড়াও এই সমস্ত উপাদানগুলো একটি স্বাস্থ্যকর এবং উন্নত জীবনধারার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৮-৮-৮ নিয়ম বাস্তবায়নের ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ
এই ৮-৮-৮ নিয়মটি ব্যক্তিগত, পরিবেশগত এবং সামাজিক বিভিন্ন কারণের ফলে বাস্তবে প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে যেতে পারে। একজন ব্যক্তির জীবনযাত্রা, সময়সূচী এবং বাধ্যবাধকতা তাদের প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়া, কাজ করতে এবং পরিবার বা বন্ধুদের সাথে থাকার জন্য সঠিক ৮ ঘন্টা আলাদা করা একটু কঠিনই বটে। উপরন্তু, সামাজিক চাপ কখনও কখনও ব্যক্তিদের জন্য এই ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন করে তুলে। এইসব কারণগুলোর জন্য, আপনার জীবনে ৮-৮-৮ নিয়মটি কার্যকর করতে অনেক প্রচেষ্টার প্রয়োজন হতে পারে। যাইহোক, সঠিক মানসিকতা এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার সাথে, যে কেউ স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য এই পদ্ধতির থেকে উপকৃত হবে।
শেষকথা
সাধারণত এই ‘আট-আট-আট’–নিয়মটি জীবন এবং কাজের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। এটি মননশীলতা এবং উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহিত করে। এমনকি তা আপনার মানসিক চাপ এবং ক্লান্তিবোধ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। যদিওবা এই সময়সূচীটি কঠোরভাবে মেনে চলা প্রত্যেকের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। মূলত ৮-৮-৮ নিয়মের ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের পেশাগত এবং ব্যক্তিগত উভয় জীবনেই উদ্দেশ্য, ব্যস্ততা ও সুস্থতার ধারনা বৃদ্ধির জন্য একটি মূল্যবান হাতিয়ার হতে পারে। আর তাইতো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য দিনরাত্রির ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করুন এই ‘আট-আট-আট’–এর নিয়মের মধ্যে।