রমজানের খাদ্যাভ্যাস! সুস্বাস্থ্যের জন্য যে খাবারগুলো জরুরী
আমরা বেশীরভাগই জানিনা রমজানের এই রোজায় আসলে আমাদের কি ধরণের খাবার গ্রহণ করা উচিৎ এবং কোনগুলো বর্জন করা উচিৎ। যার ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে ভোগতে থাকি, যেখানে ফাস্টিং বা রোজা রাখা আমাদের শরীরের জন্য অনেক কল্যাণকর! তাই আসুন জেনে নিই আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কোন খাবারগুলো রোজাতে বেশি উপকারী।
রমযানের মূল ইবাদতের প্রধান হল একটা বড় সময় ধরে পানাহার থেকে বিরত থাকা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এই সময়টা বছর বা সময়ভেদে ১২-১৫ ঘন্টাও হয়ে থাকে। এই দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থেকেও কিভাবে সুস্থ্য জীবন-যাপন করা যায় সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
অনেক সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস না থাকার কারণে দেখা যেতে পারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও জটিলতা। সেইসব জটিলতা কাটিয়ে উঠে সঠিক ও সহজলভ্য খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে কিভাবে আমরা সুস্থ্য থাকতে পারি এবং সঠিকভাবে রমযানের সময় ইবাদত করতে পারি, সেই বিষয় নিয়ে কিছু বিষয় আলোচনা করাই এই আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্য।
পানাহার থেকে বিরত থাকলে শরীরে কী প্রভাব পড়ে?
আমরা যখন পানাহার থেকে বিরত থাকি অথবা আমাদের শরীর যখন রাতের বা সেহরির খাবারের বিপাকীয় ব্যবহার শেষ করে ফেলে, তখন শরীর তার যকৃত (লিভার) এবং পেশীগুলিতে সঞ্চিত থাকা শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার করতে থাকে। একইভাবে শরীরে পানির পরিমাণও কমতে থাকায় ডিহাইড্রেশন বা পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। এই পানিস্বল্পতা কিছুটা কমানোর জন্য আমাদের কিডনি তার ছাঁকন প্রক্রিয়া কমিয়ে প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস করে যতটা সম্ভব পানি ধরে রাখার চেষ্টা করে। এই পানিস্বল্পতার জন্য সাধারণত মাথা ব্যাথা, দূর্বল লাগা এবং মনযোগের অভাব তৈরি হয়। এছাড়া স্বাভাবিক সময়ে যাদের চা-কফি পানের অভ্যাস আছে, তাদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের দূর্বলতা অনুভব হতে পারে।
শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিক রোগী, কিডনি বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের রোগীদের পাশাপাশি যারা গরম বা রোদের মাঝে কাজ করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেশি। ডিহাইড্রেশনের কারণে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বা বমিভাব, উচ্চ জ্বর বা প্রস্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যে না খেয়ে থাকাটা বেশ বিপদজনক! আসলে কি তাই?
রমজানের রোজা রাখা কি শরীরের জন্য ভালো?
- বিশেষজ্ঞদের মতে দিনের বেলা খাবার গ্রহণকে সীমাবদ্ধ করা গেলে উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ এবং স্থূলত্বের মত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
- পুষ্টিবিদদের মতে রোজা আমাদের পাকস্থলি বা অন্ত্র পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং তার স্তরগুলোকে শক্তিশালী করে। এটি অটোফ্যাজি নামে একটি প্রক্রিয়াও উদ্দীপিত করতে পারে, যেখানে আমাদের শরীরের ক্ষতিগ্রস্থ কোষগুলি নিজেই নিজেদের অপসারণ করতে সাহায্য করে।
- বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে যে, কেউ যদি সেহরি এবং ইফতারে পুষ্টিকর খাবার এবং যথেষ্ট পানি পান করে, তাদের ক্ষেত্রে রোজা রাখা ক্ষতিকর নয়।
- আরোও কিছু গবেষনার দেখা গেছে যে দীর্ঘ ১ মাস রোজা রাখার কিছু উপকারী দিকও রয়েছে। বিশেষ করে যাদের ওজন একটু বেশি তাদের ক্ষেত্রে রোজা রাখা ওজন কমাতে এবং সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে।
রোজা পালনের জন্য আমাদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস নির্বাচন, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি ও আনুগত্য প্রয়োজন। আর চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু নিয়ম নীতি ও পরামর্শ অনুসরণ করলে, কষ্ট ছাড়াই রোজা পালন করা যায়।
ইফতারে কি খাবেন?
সারাদিন রোজা রাখার পর প্রথমেই যেহতু ইফতার খেয়ে থাকি, তাই ইফতারের উপকরণও সেভাবেই আমাদের বাছাই করতে হবে। ইফতারের সময়-
- প্রচুর পরিমাণে পানি বা তরল,
- কম চর্বিযুক্ত খাবার, এবং
- শক্তির জন্য কিছু প্রাকৃতিক শর্করাযুক্ত খাবারের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
তবে মনে রাখতে হবে খুব বেশি অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত প্রচুর খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা এড়ানো উচিত। ফল-মূল এবং শাক-সবজি, দুগ্ধজাতীয় খাবার, মাংস, মাছ, ডিম, ছোলা এবং মটরশুটি খাওয়া যেতে পারে।
ইফতারের পর কিছুটা সময় হাটা গেলে তা আমাদের খাবার হজম করতে সহযোগীতা করে। আমরা যদি ইফতারের পর মসজিদে মাগরীব এবং তারাবীহ নামাজে উপস্থিত হই তবে সেখানেও আমরা কিছু সময় হাঁটতে পারি।
পারত পক্ষে দোকানের তৈরি ইফতারি ও সেহেরী না খাওয়াই ভালো। আসুন ইফতারে খাবার-পানীয়ের কয়েকটি আইটেম দেখে নেওয়া যাক-
১. পানীয়ঃ পানীয় হিসেবে আমরা সাধারণ পানি, দুধ, ফলের রস পান করতে পারি যেখানে কোনও অতিরিক্ত ক্যালোরি বা শর্করা নেই। দুধ এবং ফলের জুসই আমাদের প্রাকৃতিক শর্করা এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। এছাড়া সালাদও আমাদের শরীরে প্রচুর পানীর সরবরাহ করে।
২. খেজুরঃ বিশ্বব্যাপী খেজুর একটি জনপ্রিয় ফল যা আমরা ইফতারে খেতে পারি। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সময় থেকে রোজা ভাঙার জন্য আমরা খেজুর খেয়ে থাকি। এই খেজুর আমাদের শরীরে শক্তির জন্য প্রাকৃতিক শর্করা, পটাসিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ জাতীয় খনিজ সরবরাহ করে। খেজুর ফাইবারেরও একটি আদর্শ উৎস। তবে খেজুরের পাশাপাশি আমরা অন্যান্য শুকনো ফল যেমন কিশমিশ খেতে পারি যা ফাইবার এবং পুষ্টি সরবরাহ করে।
৩. দেশীয় ফলঃ ইফতারে আমরা ভাজাপোড়ার পরিবর্তে খেজুরের পাশাপাশি প্রচুর দেশীয় ও সহজলভ্য পুষ্টিকর ফল-মূল খেতে পারি। যেমন- কলা, পেপে, আনারস, আপেল, কমলা, বাঙ্গী, তরমুজ ইত্যাদি খেতে পারি যাতে প্রচুর শর্করা, তরল, ভিটামিন এবং খনিজ লবণ থাকে।
৪. শর্করা ও আমিষঃ সাধারণত আমরা সবাই ইফতারে মুড়ি খেয়ে থাকি। এই মুড়ি বা চিড়া আমাফের শর্করার একটি ভালো উৎস হিসেবে কাজ করে। মূড়ির পাশাপাশি আমরা কম তেল এবং কম মসলা সম্বলিত শর্করা যেমন আলু, রুটি ইত্যাদি খেতে পারি। আমিষের জন্যা আমরা একইভাবে মাছ বা মাংসের তৈরি খাবার খেতে পারি। তবে এদের খুব বেশি ভেজে বা পুড়িয়ে (কাবাব) না খাওয়া ভালো।
৫. স্যুপঃ স্যুপ ইফতারের একটি ভালো উপাদান হতে পারে যা আমাদের শরীরে উপাদানের উপর ভিত্তি করে শর্করা, আমিষ এবং পানি সরবরাহ করে। এই স্যুপ আমরা ঘরেই তৈরি করে নিতে পারি। সবজি, মাংস, ডাল, মটরশুটি, ভূট্টা এবং অন্যান্য স্টার্চ জাতীয় উপাদান দিয়ে আমরা সহজেই ঘরেই তৈরি করে নিতে পারি বিভিন্ন ধরনের স্যুপ।
সেহরিতে কি খাবেন?
মনে রাখতে হবে, সেহেরীর খাবার মুখরোচক খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্য সম্মত হওয়া প্রয়োজন। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়। ইফতারের মত সেহরিতেও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আগামীকালের জন্য যথেষ্ট হাইড্রেটেড কিনা তা নিশ্চিত করতে তরল সমৃদ্ধ খাবার, শক্তির জন্য স্টার্চ জাতীয়, উচ্চ ফাইবার আছে এমন খাবার খেতে হবে যা আমাদের হজমে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করতে পারে। আসুন সেহরির কয়েকটি আইটেম সম্পর্কে জেনে নেই-
১. প্রোটিনঃ ডিম প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস এবং এতে ক্যালরিও কম থাকে। সিদ্ধ বা পোচ ডিম ছাড়াও পেঁয়াজ, টমেটো ইত্যাদির মিশ্রণে ভাঁজা ওমলেট খুব তাড়াতাড়ি এবং সহজেই তৈরি করা যায়।
প্রোটিনের আরেকটি উৎস হ'ল মুরগি বা মাছ। সারাদিন রোজা রাখার পর অল্প মসলা দিয়ে রান্না করা মুরগী বা মাছ হতে পারে আমাদের সেহরিতে আমীষ বা প্রোটিনের খুবই ভাল উৎস।
২. কার্বোহাইড্রেটঃ ভাত-রুটি এগুলো আমাদের দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে অন্যতম। এরা আমাদের শরীরে ফাইবার সহ কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। আপনি ফলের সাথে ভাতের পুডিং চেষ্টা করতে পারেন। দুগ্ধ বা ফলের সাথে অন্যান্য কারবহাইড্রেট সমৃদ্ধ শাকসবজি খেতে পারেন।
৩. শাক-সবজিঃ সেহরিতে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খেতে হবে। দেশীয় শাক-সবজি যেমন লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পুইশাক, পালং শাক, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা কলা, পটল, করলা ইত্যাদি মৌসুমী শাক-সবজি সহজলভ্য এবং এদের মাঝে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ লবন থাকে।
৪. দইঃ এটি সেহরিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি ভাল খাবার হতে পারে কারণ এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, ভিটামিন বি জাতীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং এতে তরলও রয়েছে। দই এর সাথে দেশীয় ফল যেমন কলা এবং চিড়া মিশ্রিত করেও খেতে পারি। এছাড়া দই বা দই জাতীয় খাবার আমাদের খাবার হজমেও সহযোগীতা করে থাকে।
৫. পানিঃ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং অন্যান্য ভিটামিন নিশ্চিত করার পর আমাদের অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণ পানি বা তরল খাবার, যেমন স্যুপ খেতে হবে। এই পানি আমাদের সারাদিন শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে। খেয়াল রাখতে হবে ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত অন্তত ৮-১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
রমজানের পুরো মাস জুড়ে কীভাবে হাইড্রেটেড থাকবেন?
রমজান মাসে হাইড্রেটেড থাকাটা খুব জরুরী, তাই আমাদের কিছু জিনিস মেনে চলা উচিৎ।
১. পরিকল্পনা করে পানি পান করাঃ শরীরে পানির যথাযথ পরিমাণ নিশ্চিত করতে পানি মেপে পান করলে ভালো। যেমন গ্লাস দিয়ে পান করলে ইফতারের সময় থেকে পরবর্তীতে ৮-১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় ইফতারের শুরুতেই খেজুরের সাথে ১-২ কাপ পরিমাণ পানি পান করে নেওয়া। সেক্ষেত্রে আমরা অল্প পরিমাণ ইফতার করে মাগরীবের নামাজ আদায় করে আবার ১-২ কাপ পানি পান করতে পারি যেন আগের খাবার ও পানি কিছুটা হজম শুরু করতে পারে।
২. লবণ ও চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলাঃ সাধারণত, আমরা যখন প্রক্রিয়াজাত চিনিযুক্ত পানীয়গুলি পান করে রোজা ভঙ্গ করি, তখন আমরা মনে করি যে আমাদের তৃষ্ণা নিবারণের পাশাপাশি তা আমাদের শরীরে গ্লুকোজ এর ঘাটতিকেও কমিয়ে দেয়। তবে এটা আমাদের একটা ভুল ধারণা। যদিও এটি আমাদের রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণকে অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়, তবে এক্ষেত্রে আমাদের শরীর গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মূত্রের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে আমাদের আবার ডিহাইড্রেশন হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সাধারণ পানীয় অথবা ফলের জুস পান করতে পারি। এর সাথে পুদিনা বা লেবু মিশ্রিত করে স্বাদ বাড়িয়ে নেয়া যায়।
চিনির মত ইফতারে অতিরিক্ত লবণও আমাদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। তাই অতিরিক্ত লবণ ও প্রসেসড খাবার পরিহার করে অল্প পরিমাণ লবণ ব্যবহার করতে হবে।
৩. রসালো ফল খেতে পারেনঃ শসা এবং তরমুজ আমাদের দেশে খুবই সহজলভ্য। শসায় সাধারণত ৯৬ শতাংশ পানি এবং তরমুজে প্রায় ৯২ শতাংশ পানি থাকে। এগুলিতে ফাইবারের পরিমাণও বেশি যা আমাদের শরীরকে পরিপূর্ণ রাখতে এবং দেহের প্রয়োজনীয় খনিজগুলি পূরণ করতে সহায়তা করবে। ইফতারে এগুলো খেলে আমাদের পানি এবং খনিজের প্রয়োজনীয়তা অনেকখানি পূরণ করা সম্ভব। এছাড়াও আনারসেও প্রচুর পানি থাকে।
৪. ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলাঃ আমাদের কার্বোনেটেড, বেভারেজ ও সুগার ড্রিংক বা নানা ধরনের শরবত পরিহার করা উচিত। এছাড়া কফি ও চায়ের ডাইইউরেটিক ইফেক্ট-এর কারণে ইফতার ও সেহেরিতে চা কফি পরিহার করা বা কম পান করা ভালো। তাই সেহরিতে এবং ইফতারের পরে আমরা এনার্জী ড্রিংক, সফট ড্রিংক, চা বা কফি পান না করে এদের পরিবর্তে যদি আমরা ক্যাফেইন ফ্রি অথবা কম ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করতে পারি। চা বা কফির বিকল্প হিসেবে আমরা গ্রীন টি পান করতে পারি। যদি গ্রীষ্মে রোজা রাখি তবে ঠান্ডা পানীয়ের দিকে নজর দেয়াই আমাদের জন্য শ্রেয়। এছাড়া ধূমপান কমিয়ে আনাও রমজানে সুস্থ্য থাকার একটি প্রক্রিয়া হতে পারে।
৫. প্রয়োজন ছাড়া রোদে কম যাওয়াঃ প্রয়োজন ব্যতিত অতিরিক্ত রোদে বা সূর্যের আলোতে বেশি সময়ের জন্য না যাওয়া ভালো। কারণ এক্ষেত্রে আমাদের ডিহাইড্রেশন হওয়ার যম্ভাবনা বেশি বেড়ে যায়।
পরিশেষ
রমজান মাসে ধর্মীয় ইবাদত করা ও বিধি-বিধান মেনে চলা যেমন অতি গুরুত্বপূর্ণ, তার পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠভাবে করাটাও আমদের জন্য জরুরী। সারাদিন রোজা রেখে এই কাজগুলো সুস্থ্যভাবে করার জন্য স্বাস্থ্য ঠিক রাখা অতীব দরকার। আর সে কারণেই দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সেহরি ও ইফতারে পুষ্টি ও ভিটামিনে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য বাছাইও বাঞ্ছণীয়। আর যেহেতু এই সিয়াম সাধনা দীর্ঘ ১ মাস ধরে হয়ে থাকে, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো। এই দীর্ঘ সময়ে ভুল খাদ্যাভ্যাস যেমন আমাদের অসুস্থ্য করে তুলতে পারে, তেমনি আমাদের ইবাদতের জন্যও পরিপন্থি হয়ে উঠতে পারে।
তাই আসুন, তৈলাক্ত এবং বাহিরের ভাজা-পোড়া খাবার যথাসম্ভব কমিয়ে দিয়ে পুষ্টিকর দেশীয় ও সহজলভ্য খাবার খাই। নিজে সুস্থ্য থাকি, পরিবারকে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করি। মহান আল্লাহ আমাদের এই মহামারী থেকে রক্ষা করে সঠিক ও সুস্থ্যভাবে সিয়াম পালনে সাহায্য করুক। সকলের জন্য শুভ কামনা।