ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লাইফস্টাইলে আনুন ৬টি পরিবর্তন
শুধুমাত্র ঔষুধ সেবন করে আপনি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারেন তবে জীবনধারা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত তা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এবং এটি শুরু করতে কিন্তু আপনার এখনও খুব বেশি দেরি হয়ে যায় নি। আর এর জন্য নিচের টিপসগুলি আপনার জন্য দারুণ কার্যকারী হতে পারে।

আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে নিবিড় পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে ছয়টি অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আসুন সেই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে জেনে নেই-
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্য
আপনার ডায়াবেটিস থাকলে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনি যা খান তা আপনার রক্তে শর্করাকে প্রভাবিত করে। কোন খাবার কঠোরভাবে বন্ধ করার মোটেও প্রয়োজন নেই, আপনার শরীরের যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করুন। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার খান। চর্বিহীন দুগ্ধজাত খাবার এবং চর্বিহীন মাংস বেছে নিন। উচ্চমাত্রার চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার সীমিত কিংবা পরিহার করুন। মনে রাখবেন যে কার্বোহাইড্রেট চিনিতে পরিণত হয়, তাই আপনার কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার দিকে নজর রাখুন। আপনি যদি আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করেন তবে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ।
২. ব্যায়াম
আপনি এখনও সক্রিয় না হলে, এটিই শুরু করার উপযুক্ত সময়। আপনাকে কোন জিমে যোগদান করতে হবে না কিংবা ক্রস-ট্রেনিং করতে হবে না। শুধু হাঁটুন, বাইক চালান বা সাঁতার কাটুন। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত ৩০ মিনিটের ক্রিয়াকলাপ যা আপনাকে সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন ঘামতে সাহায্য করে এবং জোরে শ্বাস নিতে বাধ্য করে। একটি সক্রিয় জীবনধারা আপনার রক্তের শর্করাকে কমিয়ে এনে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি আপনার হৃদরোগের সম্ভাবনাও কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, এটি আপনাকে অতিরিক্ত ওজন হারাতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩. নিয়মিত চেকআপ
বছরে অন্তত দুবার আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। ডায়াবেটিস আপনার হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। সুতরাং আপনার কোলেস্টেরল, রক্তচাপ এবং A1C (৩ মাসের মধ্যে গড়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ) এই মাত্রাগুলো জানুন। প্রতি বছর সম্পূর্ণ চোখের একটি পরীক্ষা করুন। পায়ের আলসার এবং স্নায়ুর ক্ষতির মতো সমস্যাগুলি পরীক্ষা করতে একজন ফুট ডাক্তারের কাছে যান।
৪. মানসিক চাপ
আপনি যখন মানসিক চাপে থাকেন, তখন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। এবং যখন আপনি উদ্বিগ্ন হন, আপনি আপনার ডায়াবেটিস ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এতে আপনি ব্যায়াম করতে, সঠিক খাবার খেতে বা ঔষুধ খেতে ভুলে যেতে পারেন। স্ট্রেস দূর করার উপায় খুঁজুন, গভীর শ্বাস, যোগব্যায়াম বা নানান রকম শখের কাজ করুন যা আপনার স্নায়ূকে শিথিল করে।
৫. ধূমপান
ডায়াবেটিস আপনার হৃদরোগ, চোখের রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, রক্তনালীর রোগ, স্নায়ুর ক্ষতি এবং পায়ের সমস্যাগুলির মতো স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি করে তোলে। আপনি যদি ধূমপান করেন তবে আপনার এই সমস্যাগুলি হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি। ধূমপান ব্যায়াম করাকে কঠিন করে তুলতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করার উপায় সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
৬. অ্যালকোহল পরিহার করুন
যদিও ডায়াবেটিক রোগীরা সীমিত আকারে অ্যালকোহল খাওয়া যেতে পারে, তবে এটি পরিহার করাই সর্বোত্তম। অ্যালকোহল আপনার রক্তে শর্করাকে খুব বেশি মাত্রায় বা খুব কম মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। অতএব আপানাদের অ্যালকোহল বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
যার যার স্বাস্থ্য তার কাছে। তাই সুন্দর স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে। একটি সুস্থ ও সঠিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে এভাবেই কিন্তু আমরা ডায়াবেটিসকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি