কিভাবে অ্যালার্জি বা ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করবেন?

সাধারণ ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জির ঠাণ্ডা বেশ অনেকগুলো সাদৃশ্য পূর্ণ উপসর্গ প্রকাশ করলেও দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন রোগ। সাধারণ ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জির ঠাণ্ডার ভেতর পার্থক্য ও করণীয় জানা থাকলে খুব সহজেই এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে পারবেন।

সাবিত ( ছদ্মনাম)  ও তার পরিবার অনেক দিন পর গ্রামের বাড়ি গেছে। সেখানে গিয়েই বাঁধলো বিপত্তি, সাবিতের অনবরত নাক ঝরতে লাগলো, সাথে হাঁচি ও কাশি। তার মায়ের ধারণা রোদে রোদে মাঠ-ঘাটে ঘুরে বেড়িয়ে ঠাণ্ডা লেগেছে। সাধারণ ঠাণ্ডা ভেবে কেউ গুরুত্ব দেয় নি। এদিকে সাবিত সে অবস্থাতেই বাইরে বাইরে ঘুরেছে। কিছুদিন পর সাবিতের অবস্থার অবনতি হয়। ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি বলেন, সাবিতের ঠাণ্ডায় সমস্যা নেই। সে অ্যালার্জি জনিত ঠাণ্ডায় ভুগছে।

অ্যালার্জি আর সাধারণ ঠাণ্ডার উপসর্গ  গুলো বেশ কাছাকাছি, তাই গুলিয়ে ফেলাও খুব সহজ। দুটো রোগের পার্থক্য করতে না জানলে বেশ ভোগান্তি সহ্য করতে হতে পারে। এমনকি পরবর্তীতে শারীরিক জটিলতা ও সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে একটু জ্ঞান রাখাই পারে ভবিষ্যতে জটিলতা থেকে আপনাকে ও আপনার প্রিয় জনকে সুস্থ রাখতে। চলুন তবে জেনে আসি বিস্তারিত।

সাধারণ ঠাণ্ডা কি?

এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ, যা মানুষের শ্বসনতন্ত্রে আক্রমণ করে। আমাদের দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভাইরাস দমন করতে চেষ্টা করে। এর ফলে মিউকাস (সর্দি / কফ) উৎপন্ন হয়। মিউকাস ভাইরাস দমন ও শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। সাধারণ ঠাণ্ডা অনেক ধরণের ভাইরাস থেকে হতে পারে। উপসর্গে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে,

  •  হাঁচি 

  • কাশি

  • সর্দি লাগা

  • গলা ব্যথা

  • হালকা থেকে মাঝারি জ্বর

  • মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।

অ্যালার্জি কি?

প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে বিভিন্ন বস্তু ও বস্তু কণার প্রবেশ হয়। আমাদের খাবারের সাথে বা শ্বাস নেবার সময় ক্ষুদ্র বস্তু কণা নাকে প্রবেশ করে এবং চোখে ধুলো কণা পড়ে। কিন্তু অ্যালার্জি তখনই হয়, যখন কোন বিশেষ বস্তুকে আমাদের শরীর ক্ষতিকর হিসেবে ধরে নেয় ও প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। যে বস্তু কণার জন্য অ্যালার্জি সৃষ্টি হয় তাকে এলার্জেন বলে। বিভিন্ন মানুষের জন্য এলার্জেন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন: 

  • ফুলের পরাগ

  • ধূলোবালি

  • কাঠের গুড়া

  • পশুর লোম ইত্যাদি।

অ্যালার্জির ঠাণ্ডার উপসর্গগুলো হল,

  • হাঁচি

  • কাশি

  • নাক ঝরা

  • চোখ চুলকানো ও লাল হওয়া

  • নাক বন্ধ হওয়া

শীতকালে প্রচুর ধূলোবালি হবার কারণে প্রচুর মানুষ অ্যালার্জির ঠাণ্ডায় ভোগে, কিন্তু আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ অ্যালার্জির ঠাণ্ডা ও সাধারণ ঠাণ্ডাকে একই রোগ হিসেবে জানে। ঠাণ্ডা লাগা বাড়লে সিরাপ বা ট্যাবলেট সেবনেও আমরা ডাক্তারের পরামর্শের দরকার মনে করি না। যার ফলে সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদী হয়ে দাঁড়ায়, এবং শীত মৌসুমে নিউমোনিয়ার মত রোগে হাসপাতাল বোঝাই হয়ে পড়ে।

সাধারণ ঠাণ্ডা আর অ্যালার্জির ঠাণ্ডার মধ্যে পার্থক্য বুঝুন 

উপসর্গ সাধারণ ঠাণ্ডা অ্যালার্জির ঠাণ্ডা
কাশি হয় মাঝেমাঝে
সাধারণ ব্যথা হয় হয় না
ক্লান্তি ও দুর্বলতা মাঝেমাঝে মাঝেমাঝে
চোখ চুলকানো বিরল হয়
হাঁচি হয় হয়
গলা ব্যথা হয় বিরল
সর্দি হয় হয়
নাক বন্ধ  হয় হয়
জ্বর মাঝেমাঝে হয় না

মনে রাখবেন ঠাণ্ডা লাগলে,

  • আস্তে আস্তে উপসর্গ দেখা দেবে ও সময়ের সাথে বাড়বে

  • গায়ে ব্যথা

  • গলা ব্যথা

  • জ্বর হতে পারে।

  • ৭-১০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে

অন্যদিকে অ্যালার্জি জনিত ঠাণ্ডা,

  • আস্তে বাড়বে না, হুট করে জেঁকে বসবে

  • গায়ে ব্যথা হবে না, গলা ব্যথা বিরল

  • জ্বর হবে না

  • ৭ দিন থেকে  মাস খানিক পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে

করোনা ভাইরাস নয়ত?

অ্যালার্জি ও ঠাণ্ডার কিছু উপসর্গ করোনাভাইরাসের সাথে মিলে যায়, সেক্ষেত্রে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়। করোনাভাইরাসের সবচাইতে সাধারণ উপসর্গ গুলো হল-

  • শুকনো কাশি

  • জ্বর

  • গায়ে ব্যথা।

যা সাধারণ ঠাণ্ডা লাগায় লাগায়ও হতে পারে। এমন উপসর্গ পেলে নিজেকে আলাদা করে ফেলুন। ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন।

আর যদি,

  • শ্বাসকষ্ট

  • প্রচণ্ড গলাব্যথা

  • খাবার রুচি না থাকা

এসব উপসর্গ দেখা দেয় তবে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন এবং পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করুন। শঙ্কিত হবেন না। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাও শ্বাস কষ্টের কারণ হতে পারে। আপনার যদি অ্যাজমা থেকে থাকে তাহলে অ্যালার্জির ঠাণ্ডায় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

ঋতুর সাথে ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জির সম্পর্ক

সাধারণ ঠাণ্ডা হেমন্ত ও শীতের সময় বেশি দেখা যায়। তবে বছরের যেকোনো সময়ই সাধারণ ঠাণ্ডা আক্রান্ত হওয়া বিরল নয়।

অ্যালার্জির ঠাণ্ডা সাধারণত শীতের শেষ থেকে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে বেশি হয়। কিন্তু এটিও বছরের যেকোনো সময়ই হতে পারে।

একটি সাধারণ ভুল

অনেকে মনে করেন সবুজ বা হলদেটে সর্দি হল ঠাণ্ডার লক্ষণ এবং পানির মত নাক ঝরা হল অ্যালার্জি। তবে এটি সঠিক নয়, সাধারণ ঠাণ্ডার শুরুতে পানির মত নাক ঝরতে পারে এবং অ্যালার্জিতেও সর্দির রং নির্দিষ্ট নয়। 

বিপদ গুলো জানুন

সাধারণ ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জি প্রাণঘাতী নয়। তবে কিছু বিপদ রয়েছে যা জানা প্রয়োজন।

সাধারণ ঠাণ্ডার ক্ষেত্রে কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যাদের রোগ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘ মেয়াদি হতে পারে। যেমন,

  • শিশু

  • বৃদ্ধ

  • ডায়াবেটিস রোগী

  • এইডস রোগী ও

  • বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে এমন কারো ঠাণ্ডা লাগা গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

দীর্ঘ মেয়াদি ঠাণ্ডা লাগা অন্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। যেমন, ব্যাক্টেরিয়াল নিউমনিয়া।

কিছু ফ্লু ভাইরাস এমনকি করোনা ভাইরাসের কিছু লক্ষণও ঠাণ্ডার সাথে মেলে। তাই একেবারে অগ্রাহ্য করলে নিজের বিপদের সাথেও আরো অনেক মানুষের মাঝেও রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে অ্যালার্জির ভেন্ডার সবচেয়ে বড় বিপদ হল, কিসে অ্যালার্জি বাড়ে সেটা না জানা। 

অ্যালার্জি ও ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলার উপায়

সাধারণ ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জি থেকে শত ভাগ নিরাপদ থাকা সম্ভব নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত অভ্যাস গুলো আপনাকে রোগমুক্ত রাখবে।

সাধারণ ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে,

  • ধুম পান বন্ধ করুন

  • নিয়মিত হাত ধোন

  • যথেষ্ট ঘুমান

  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন

  • কেউ ঠাণ্ডা আক্রান্ত হলে দূরত্ব বজায় রাখুন, নিজে আক্রান্ত হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।

  • যথেষ্ট পানি পান করুন

অ্যালার্জি থাকলে নিম্নোক্ত  বিষয় গুলো খেয়াল রাখবেন,

  • অ্যালার্জির ঋতু তে জানালা খোলা রাখবেন না

  • কারপেট বা কম্বল জাতীয় সবকিছু ব্যবহার বন্ধ করুন

  • ধুলাবালি মুক্ত পরিবেশে থাকুন

  • মাস্ক ব্যবহার করুন

  • অপরিষ্কার হাতে নাক-চোখ ধরবেন না

চিকিৎসা পদ্ধতি

সাধারণ ঠাণ্ডা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সাধারণত প্রয়োজন পড়ে না। উপসর্গ যদি বেশি মনে হয় অথবা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত না সারে তবে ডাক্তার দেখানো উচিত। ডাক্তার আপনাকে কফ পরীক্ষা ও এক্সরে দিতে পারেন, ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন বা নিউমোনিয়া নয় এটি নিশ্চিত করতে।

অ্যালার্জির সমস্যা হলে আপনার একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা একজন অ্যালার্জিস্টের কাছে যাওয়া উচিত। ডাক্তার অ্যালার্জির ধরণ বুঝতে রক্ত পরীক্ষা করতে দিতে পারেন।

সাধারণ ঠাণ্ডার চিকিৎসা

সাধারণ ঠাণ্ডা নিজে থেকেই সেরে যায়, তবুও কিছু ঔষধ এই প্রক্রিয়া টি দ্রুত করতে পারে,

  • ঠাণ্ডার সিরাপ

  • নাক পরিষ্কার করার জন্য নাকের স্প্রে

  • ব্যথা নাশক ঔষধ

শিশুদের ক্ষেত্রে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। ব্যথা নাশক ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন, বিশেষ করে অন্য কোন রোগ থাকলে বা গর্ভবতী নারীদের ঠাণ্ডার ঔষধ সেবনে সতর্ক থাকতে হবে।

কিছু ঘরোয়া চিকিৎসাও ভালো কাজ করে। যেমন,

  • গরম পানি পান করা

  • লবণ পানি দিয়ে কুলকুচা করা

  • ভেষজ চা, জুস সহ প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ

অ্যালার্জির চিকিৎসা

অ্যালার্জির সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধ হল, যা থেকে অ্যালার্জি শুরু হয় সেগুলো থেকে দূরে থাকা। একান্তই যদি এড়িয়ে না চলা যায়, কিছু ঔষধ উপসর্গ গুলো কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে-

১) এন্টিহিস্টামিন (Antihistamines)

এন্টিহিস্টামিন শরীরে হিস্টামিন উৎপন্ন হতে বাঁধা দেয়। যেটি মূলত অ্যালার্জির জন্য দায়ী। ঔষধটির পার্শপ্রতিক্রিয়া হল ঘুম ঘুম ভাব, তাই ঔষধটি রাতে ঘুমানোর আগে সেবন করতে হবে। তবে অবশ্যই সীমিত আকারে এবং এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

২) ডিকনজেসটেন্ট (Decongestants)

এটি নাকের সাইনাসের আয়তন কমিয়ে সর্দি হ্রাস করে। ঔষধটি নিম্নোক্ত নামে বিক্রি হয়,

সাধারণ ডিকনজেসটেন্ট গুলি হল-

  • অক্সিমেটাজলিন (oxymetazoline)

  • সিউডোফেডরিন (pseudoephedrine)

  • ফিনাইলইফ্রিন (phenylephrine)

এগুলি সিরাপ বা স্প্রে রূপে পাওয়া যায়। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহার ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি করবে। একটানা তিন দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে উত্তম হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

৩) চোখের ড্রপ

অ্যালার্জিতে চোখ চুলকানো ও পানি পড়া বন্ধে ডাক্তারেরা কিছু ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।

৪) অ্যালার্জি শর্ট 

এটি একটি রোগ প্রতিরোধি থেরাপি। এই চিকিৎসায় আপনার যে বস্তুতে অ্যালার্জি সেটা স্বল্প পরিমাণে আপনার শরীরে প্রবেশ করিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদি ভাবে অ্যালার্জি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

 

পরিশেষে, সাধারণ ঠাণ্ডা বা অ্যালার্জি এই রোগ দুটি প্রাণঘাতী না হলেও, উপসর্গগুলোকে বেশি অবজ্ঞা করলে শ্বসন তন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা তুলনা মূলক বেশ মারাত্মক রোগ। ঠাণ্ডা বা অ্যালার্জি যদি ১০ দিনের বেশি সময় থাকে বা অবস্থা যদি খারাপের দিকে যায় তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অবজ্ঞা কিংবা ভয় নয়, সঠিক জ্ঞান ও স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনই দিতে পারে ব্যাধি বিহীন স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা।

 

ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ কি এবং কিভাবে প্রতিরোধ করবেন? (২০২১)

শীতকালে যে ৫টি রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে

Default user image

দিগ্বিজয় আজাদ, লেখক, আস্থা লাইফ

আমি শিল্প সাহিত্যের লোক, একই সাথে বিজ্ঞানের কৌতুহলী ছাত্র। লিখালিখি আঁকাআঁকি করতে ভালোবাসি, পড়ালেখা করছি মাইক্রোবায়োলোজি নিয়ে। আস্থা ব্লগে কাজ করতে পেরে চরিত্রের দুটো দিকই যেন সমানভাবে সন্তুষ্ট হচ্ছে। চেষ্টা করি কত সহজে আপনাদের সামনে প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করা যায়। এবং এই প্রক্রিয়ায় যদি কেউ লাভবান হন, বা কিছু শিখতে যদি পারি সেই আমার পরম প্রাপ্তি। ব্যক্তিগত জীবনে শখের মিউজিশিয়ান। নেশার মধ্যে বই পড়া ও ঘুরে বেড়ানো।

Related Articles