আঁশযুক্ত খাবার কি কি? কেন আশযুক্ত খাবার খাবেন?

আমাদের জীবনে আঁশযুক্ত খাবারের প্রয়োজনীয়তা, নানাধরনের আঁশযুক্ত খাবার, আঁশযুক্ত খাবার কিভাবে আমাদের তিন বেলা খাদ্য তালিকায় জায়গা করে নিতে পারে তা নিয়েই আজকের এই লেখা।

কথায় আছে " যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ " কিন্তু পুষ্টিবিদ এবং ডাক্তারদের মতে " যতক্ষণ আঁশ ততক্ষণ শ্বাস "।  সম্প্রতি হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লগে প্রকাশিত একটা রিসার্চ সামারি থেকে জানা যায়, যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমান আঁশযুক্ত খাবার গ্রহন করে, তাদের হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়বেটিস, স্ট্রোক এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুকি কম আঁশযুক্ত খাবার গ্রহনকারীদের তুলনায় ১৬% থেকে ২৪% পর্যন্ত কম হয়।

ডাক্তার ও পুষ্টিবিদরা আমাদের প্রায়শই খাবারের মেন্যুতে পর্যাপ্ত পরিমান ‘আঁশ যুক্ত’ খাবার রাখতে বলেন। আসলে আঁশ যুক্ত খাবার বলতে আমরা কি বুঝি? কেন আমাদের আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ, দিনে কতটুকো খাওয়া উচিৎ এবং কোথা থেকে আমরা পর্যাপ্ত পরিমান আঁশ পেতে পারি তা নিয়েই আজকের এই লেখা।

আঁশযুক্ত খাবার কী? 

খুব সহজ ভাষায়, উদ্ভিদ জাতীয় কিংবা উদ্ভিদ হতে প্রাপ্ত (যে কোন ধরনের শাক,সবজী, ফলমূল ইত্যাদি) খাবারের যে অংশটুকো আমাদের পরিপাকতন্ত্র হজম করতে পারেনা, কিংবা শোষন করতে পারেনা, সেটুকোই আঁশ যুক্ত খাবার। মানুষের পরিপাকতন্ত্র শর্করা, আমিষ কিংবা চর্বি জাতীয় খাবার হজম এবং শোষন করতে পারলেও সেলুলোজ নির্মিত উদ্ভিদ অংশ হজম করতে পারেনা। সেলুলোজ নির্মিত এই উদ্ভিদ প্রাপ্ত খাবারগুলোকেই আঁশযুক্ত খাবার বলা হয়।

এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, যা আমাদের পাকস্থলী হজমই করতে পারেনা, কিংবা পরিপাক তন্ত্র শোষনই করতে পারেনা, তা আমাদের খাবার কি প্রয়োজন? চলুন সহজ আলোকপাত করি এদিকে।

আঁশযুক্ত খাবারের প্রয়োজনীয়তা 

এটা সত্যি যে আমাদের শরীর আঁশযুক্ত খাবার হজম করতে পারেনা, এবং প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থাতেই তা শরীর থেকে বের হয়ে যায় পায়খানার মাধ্যমে। সেলুলোজ নির্মিত এই ধরনের আঁশযুক্ত খাবার আমাদের পাকস্থলী হজম না করতে পারলেও, এধরনের খাবারে উপস্থিত প্রচুর পরিমান ভিটামিন, এন্টি-অক্সিডেন্ট খুব সহজেই আমাদের শরীর শোষন করে নিতে পারে। আর ভিটামিন এবং এন্টি-অক্সিডেন্টের সবচেয়ে বড় সোর্সই হলো আঁশযুক্ত খাবার সমূহ। 

এছাড়াও আঁশযুক্ত খাবার, যেমন ইসবগুলের ভুসি পানিতে গুলে খেলে তা পরিপাক তন্ত্রে গিয়ে পানি শোষন করে স্ফীত হয়ে জেলীর মত আকার ধারন করে এবং পায়খানার পরিমান বৃদ্ধিকরে পরিপাকতন্ত্রকে কোষ্ঠকাঠিন্যের ন্যায় রোগ হতে মুক্ত রাখে।

আমরা জানি ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়ার পাশাপাশি কিছু উপকারী ব্যাক্টেরিয়াও রয়েছে। আমাদের পরিপাকতন্ত্রে রয়েছে এমন উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার বিশাল এক খনি। এধরনের ব্যাক্টেরিয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু এনজাইম এবং পুষ্টি পেয়ে থাকি যা কিনা আমাদের শরীর নিজে নিজে তৈরি করতে পারেনা। আর এধরনের ব্যাক্টেরিয়া নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বেছে নেয়ে আঁশযুক্ত খাবারকে। অর্থাৎ আঁশযুক্ত খাবার না খেলে আমাদের শরীরে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা যেমন কমে যাবে, তেমনি আমরা আমাদের অতি প্রয়োজনীয় কিছু এনজাইমের অভাবে জটিল কিছু রোগেও পরতে পারি। 

অন্যদিকে, জর্জিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঁদুরের উপর চালানো এক গবেষনায় দেখা যায়, যেসকল ইঁদুরকে শুধু মাত্র উচ্চমাত্রার চর্বি এবং প্রোটিন খেতে দেওয়া হয়, তাদের পরিপাকতন্ত্রের দেয়াল অপেক্ষাকৃত পাতলা হয়, যার ফলশ্রুতীতে পরিপাকতন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া সমুহ রক্ত নালীকার অনেক কাছাকাছি পৌছে যায়, যার কারনে জটিল অটোইম্যুনো ডিজিজ (নিজের প্রতিরক্ষা সিস্টেম নিজের বিরুদ্ধেই কাজ করে), অধিক ওজন এবং অতিমাত্রার ব্লাড সুগারে আক্রান্ত হয় ইঁদুরগুলো। পক্ষান্তরে যাদের খাবারের সাথে পর্যাপ্ত পরিমানে আঁশযুক্ত খাবার দেওয়া হয়, তারা এধরনের জটিলতা থেকে মুক্ত থাকে। 

অন্যদিকে যারা শরীরের ওজন কমাতে চায়, তাদের জন্যও আঁশযুক্ত খাবার এক অত্যাবশ্যকীয়। আঁশযুক্ত খাবার সহজের আমাদের পাকস্থলী পরিপূর্ন করে ফেলে এবং লম্বা সময় ধরে পাকস্থলীতে থাকে, যার কারনে ওজনের জন্য দায়ী খাবারগুলোকে সহজেই ত্যাগ করা যায়। 

আঁশযুক্ত খাবারের প্রকারভেদ 

পানিতে দ্রবীভূত হওয়ার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে আঁশযুক্ত খাবারকে দুই ভাগে  ভাগ করা হয়েছে। 

১। দ্রবনীয় আঁশযুক্ত বা সল্যিউবল ফাইবার  

এধরনের আঁশযুক্ত খাবার পানিতে দ্রবীভূত হয়ে জেলীর মত তৈরী করে। আমাদের খুব পরিচিত একটা উদাহরন হল ‘ইসবগুলের ভূসি’ এবং ‘বার্লি’। ইসবগুলের ভূসি লম্বা সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখলে দেখা যায় একধরনের জেলীর ন্যায় থকথকে কিছু একটা তৈরি হয়। এধরনের দ্রবনীয় আঁশযুক্ত খাবার রক্তের কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন এবং ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে বেশ উপকারী। এভোকাডো, মিষ্টি আলু, নাশপাতি, আপেল, কালো সীম, ব্রকলি, গাজর, সাইট্রাস ফ্রুটস (কমলা, লেবু ইত্যাদি) সহ আরো বিভিন্ন ফল এবং সবজীতে এধরনের ফাইবার পেতে পারি আমরা। 

২। অদ্রবনীয় আঁশযুক্ত বা  ইনসল্যিউবল ফাইবার 

এধরনের আঁশযুক্ত খাবার পানিতে দ্রবীভূত হয়না, বরং প্রায় সম্পূর্ন অপরিবর্তিত অবস্থায় আমাদের শরীর হতে নির্গত হয়। এধরনের খাবার আমাদের পাকস্থলীর জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিশেষ করে যারা নিয়মিত ‘কোষ্ঠকাঠিন্যে’ ভুগে, তাদের জন্য এইধরনের খাবার অত্যন্ত উপকারী। অপরিবর্তিত থাকে বলে এরা পায়খানার পরিমান বৃদ্ধি করে এবং শরীর থেকে পানি টেনে এনে পায়খানাকে অপেক্ষাকৃত পাতলা করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এধরনের খাবার শরীরের দুষিত পদার্থ শরীর থেকে দূরীকরনেও উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখে। ফুলকপি, আলু, সবুজ সীম, গম, ভুট্টা, এবং সকল ধরনের সবুজ শাকসবজি এধরনের আঁশের চমৎকার উৎস। 

দিনে কতটুকো আঁশযুক্ত খাবার খাবো?

প্রতিদিনের খাবারের তালিকাতেই পর্যাপ্ত পরিমানে আঁশযুক্ত খাবার থাকা উচিৎ। United States Department of Agriculture এর মতে একজন পূর্নবয়স্ক পুরুষের এবং মহিলার ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিদিন যথাক্রমে ৩৮ গ্রাম এবং ২৫ গ্রাম আঁশ খাওয়া উচিৎ। ৫০ বছরের পর তার পরিমান যথাক্রমে ৩০ গ্রাম এবং ২১ গ্রাম হওয়া উচিৎ। 

আঁশযুক্ত খাবারের উত্তম উৎস কী?

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ফুড সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায় যার মধ্যে ডায়াটারি ফাইবারের সাপ্লিমেন্টও অনেক। তবে আঁশের একমাত্র উৎস হিসেবে কখনোই এধরনের সাপ্লিমেন্ট পছন্দ করা উচিৎ নয়। সরাসরি উদ্ভিদজাত খাদ্য গ্রহন করলে যেমন আঁশের চাহিদা পূরণ হয়, তেমনি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনিয় ভিটামিন, মিনারেল, এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টির চাহিদাও পূরন হয়। অন্যদিকে ফাইবার সাপ্লিমেন্ট কেবল মাত্র ফাইবার বা আঁশের চাহিদাই শুধু পূরন করতে পারে। 

আবার খাবার খাওয়ার সময় মনে রাখা উচিৎ একটা ২০ গ্রামের গাঁজর মানেই যে তাতে ২০ গ্রাম আঁশ আছে, তা কিন্তু নয়। পরিচিত কিছু খাবারে কতটুকো আঁশের উপাদান থাকে তা নীচে দেওয়া হল, 

খাবার  প্রতি সার্ভিং এর পরিমান ফাইবারের পরিমান (গ্রাম)
সিরিয়াল 
ব্রান ফ্লেক্স  ১ কাপ ৭ 
ওটমিল ১ কাপ ৬ 
ছাঁটাই করা গম ১ কাপ ৪ 
শাঁক-সবজী
পুঁইশাক  ১ কাপ ৪ 
ব্রকলি  ১ কাপ ৬ 
গাঁজর  ১ কাপ ২ 
শিম  ১ কাপ ৪ 
মিষ্টি আলু  ১০০ গ্রাম ২.৫ 
শস্যদানা
বার্লি  ১ কাপ ৯ 
বাদামী চাল  ১ কাপ ৪ 
গম ১০০ গ্রাম ৭ 
ফলমূল
নাশপাতি (খোসা সহ) মাঝারি সাইযের ১ টি ৬ 
আপেল (খোসা সহ) মাঝারি সাইযের ১ টি ৪ 
স্ট্রবেরি  ১০০ গ্রাম  ২ 
কলা মাঝারি সাইযের ১ টি ৩ 
কমলা  মাঝারি সাইযের ১ টি ৩ 
রাম্পবেরী  ১০০ গ্রাম  ৬.৫ 
এভোকাডো ১০০ গ্রাম ৬.১ 
খেজুর প্রমাণ সাইজের ৩ টি  ২ 
ডাল জাতীয়
মসূর  ১০০ গ্রাম  ৭.৯
মটর  ১০০ গ্রাম  ৮.৩
সিমের বিচি ১/২ কাপ  ৬ 
অন্যান্য
পপকর্ন  ১ কাপ  ১ 
বাদাম  ১০ টি ১ 
রোস্টেড বাদাম (শুকনো) ১/৪ কাপ  ৩ 
ডার্ক চকোলেট ১০০ গ্রাম ১০.৯

 

বাঙালীর আঁশযুক্ত খাবার

অনেকের মাঝে একটি ভুল ধারনা আছে যে, সব দামি ফলমূল কিংবা সবজীতেই কেবল আঁশ আছে। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষজন কি করে আঁশযুক্ত খাবার খাব? আসলে ব্যাপারটি মোটেও তা নয়। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার মধ্যেই আমরা পর্যাপ্ত আঁশের যোগান দিতে পারি। 

আমাদের প্রধান খাদ্য ভাত। খাবার প্লেটের বড় অংশ জুড়েই ভাতের পরিমান বেশী থাকে বলে আমরা প্রায়শই পর্যাপ্ত পরিমান আঁশযুক্ত খাবার থেকে বঞ্ছিত হই। কিন্তু খুব সহজেই আমাদের প্রধান শর্করার উৎস ভাতই হয়ে উঠতে পারে আমাদের আঁশযুক্ত খাবারেরও বড় একটা উৎস, প্রয়োজন শুধু আমাদের একটু অভ্যাস বদল। বাজারে প্রচলিত মিনিকেট সাদা চালের চাহিদা অনেক, দামও বেশী। কিন্তু মজার বিষয় হল, পুষ্টি এবং গুনগত মানের দিক থেকে ছাটাই করা মিনিকেট চাল আনপলিশড বাদামী চাল থেকে প্রচুর পিছিয়ে। প্রতি ১০০ গ্রাম বাদামী চালে আঁশের পরিমান থাকে ১.৮ গ্রাম, আর মিনিকেটে তার পরিমান মাত্র ০.৪ গ্রাম!

একই অবস্থা রুটি বা পাউরুটির ক্ষেত্রেও। যেখানে প্রতি ১০০ গ্রাম লাল আটার রুটিতে আঁশের পরিমান থাকে প্রায় ৭.০ গ্রাম, সেখানে সাদা আটার রুটি থেকে আপনি পাচ্ছেন মাত্র ২.৭ গ্রাম! 

সুতরাং খাদ্যাভ্যাসের সামান্য একটু পরিবর্তন এবং প্রতিবেলা হাতের পাশেই পাওয়া পুঁইশাক, লালশাঁক, কচুশাক কিংবা মসূর ডাল পাতে নিয়েই আপনি আপনার দৈনন্দিন আঁশের চাহিদার বড় একটা অংশই পূরন করে নিতে পারেন খুব সহজেই। 

একনজরে আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা

  • পাকস্থলীর খাবারের মুভমেন্ট ঠিক রাখাঃ উপরেই আমরা আলোচনা করেছি যে আঁশযুক্ত খাবার পাকস্থলিতে খাবারের চাপ বৃদ্ধি করে, শরীর থেকে পানি শোষন করে পায়খানাকে নরম করে এবং পাকস্থলী হতে কোলন পর্যন্ত খাদ্যের মুভমেন্ট ঠিক রাখে এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে।

  • পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখাঃ আঁশযুক্ত খাবার কোলনে Hemorrhoids (রক্তনালী ফুলে যাওয়া) হবার ঝুকি কমায় এবং কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

  • কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রনে রাখাঃ পানিতে দ্রবনীয় আঁশযুক্ত খাবার সমুহ রক্তের লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা খারাপ লিপিডকে কমানোর মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে। 

  • ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ দ্রবনীয় আঁশযুক্ত খাবার গ্রহনে শরীরের শর্করার শোষন ধীরগতির হয়, যা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। এছাড়া অদ্রবনীয় আঁশযুক্ত খাবারও টাইপ-২ ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে বেশ কার্যকরি। 

  • ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার লম্বা সময়ের জন্য পাকস্থলিকে পরিপূর্ন করে রেখে ক্ষুধা নিবরান করে এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী খাবার থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। 

  • দীর্ঘায়ু লাভঃ বিভিন্ন গবেষনায় এটা প্রমানিত যে নিয়মিত পরিমিত মাত্রায় আঁশযুক্ত খাদ্যগ্রহনে স্ট্রোক সহ হৃদপিন্ডের বিভিন্ন রোগ এবং এতে থাকা উচ্চমাত্রার এন্টি অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ক্যান্সারের ঝুকি কমায় এবং দীর্ঘায়ু লাভে সহায়তা করে। 

  • এছাড়াও আঁশযুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে, যা একাধারে স্মৃতিশক্তি বর্ধক এবং শরীরের হাড় গঠনেও সাহায্য করে। গবেষনায় আরো দেখা গেছে যে আঁশযুক্ত খাবার শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং অটোইম্যুনু ডিজিজের ঝুকি কমায়। 

প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার যেমন সুস্বাস্থের জন্য আবশ্যক, তেমনি রোগমুক্ত দীর্ঘায়ুর জন্যও প্রয়োজনীয়। নিজের এবং পরিবারের প্রতিবেলার খাদ্যতালিকায় যথেষ্ঠ পরিমান আঁশযুক্ত খাবারের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন, বাচ্চাদের জন্য সুসাস্থ্যকর একটা খাদ্যাভ্যাস তৈরি করুন, প্রতিবেলা প্লেটে সবুজ সবজির নিশ্চিত করুন, এবং যতটুকো সম্ভব ছাটাই করা চাল এবং আটা এড়িয়ে চলুন।


 

Default user image

অসীম কুমার দে, লেখক, আস্থা লাইফ

গ্রাজুয়েশন করেছেন ইষ্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বিষয় ছিলো ঔষধ প্রকৌশল। ছোটবেলা থেকেই লাইফ সায়েন্স এবং রসায়নের প্রতি প্রবল আকর্ষনের কারনেই বেছে নেওয়া এই বিষয়। ব্যাচেলর অফ ফার্মেসি সম্পুর্ন করার পথেই প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন ছিলো গবেষনা ভিত্তিক কাজের সাথে, যেগুলোর পেপার পাবলিকেশনের জন্য রিভিউ স্টেজে আছে নামি কিছু সায়েন্টিফিক জার্নালে। কর্মক্ষেত্রেও বেছে নিয়েছন গবেষনার ক্ষেত্র, কাজ করছেন দেশের নামকরা একটা ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ‘গবেষনা এবং পন্য-মানোন্নয়ন’ বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিজ্ঞান ভিত্তিক টুকটাক লিখালিখির অভ্যাস ছিলো বরাবরই। নিজের লেখাপড়া এবং কর্মক্ষেত্র দুইটাই লাইফ সায়েন্স ভিত্তিক গবেষনার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে এবং নিজের একান্ত আগ্রহের কারনে যোগ দিয়েছেন ‘আস্থা লাইফ’ পরিবারে। “আশা করছি সবাই মিলে স্বাস্থ্য এবং বিজ্ঞানভিত্তিক সহজবোধ্য বাংলা ভাষার পরিপূর্ন একটা সাময়িকী হিসেবে ‘আস্থা লাইফ’কে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো অতি দ্রুত। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান যেন সবার কাছে আরো সহজবোধ্য হয়, এটাই আমার লক্ষ্য থাকবে।”

Related Articles